চার চারটি পথের মিলন হয়েছে এ বাড়িতে!!!
চার চারটি রাতের সাক্ষী  হয়েছে এ পথ!!!
চার চারটি ঘরের চারটি আশা দেখেছে এ বাড়ি!!!!
চার চারটি কন্যার রোদন শুনেছে এ মহল্লা!!!


তুমি তো তার মাঝে ছিলে একজন রহিমা?
তুমি ও তো ছিলে সেখানে!
কী সোনার সিংহাসন ছিল তোমার!!
কী সোনার পালঙ্কে শুতে তুমি!
শুনেছি যখন এ বাড়িতে তুমি এসেছিলে
তখন সোনার আকাশের নিচে
সোনার জুতো ছিল তোমার দাস দাসি।
বাড়িটির অন্দর মহল হতে অন্তরমহলে
তুমি ই ছিলে একমাত্র ভৃত্য রানী।
আর তোমার রাজার একমাত্র হৃদয়ের
একমাত্র বধু বেশ্যা ছিলে তুমি।


শুনেছি তখন তুমি খুব হিজাবী ছিলে,,,
স্বামীর নয়ন ভিন্ন সূর্যের আলো লাগুক  গায়
তা তুমি মানতেই পারতে না।
স্বামীর ঈশারার আয়তনটাই ছিল তোমার
এক লক্ষ সাতচল্লিশ হাজার পাঁচশত চল্লিশ বর্গকিলোমিটার।
এমন বধু মনের এমন নব-স্ত্রীর গায়ের মাংসটা
আর বেশিদিন ভাল লাগল না তোমার ফেরেস্তার!
ইচ্ছে হল, হরিণীর মাংস খাওয়ার।
সে এক ভীষণ অপ্রতিরোধ্য সহজ ইচ্ছে!!
কচি তুল তুলে ডিমের সাদা অংশের মত নরম হরিণী!!!


ভেবো না তুমিও সেদিন হরিণী ছিলে না?
তুমিও ছিলে।
বেশ সুস্বাদুই ছিল তোমার বোরকার নিচের ঘ্রাণ।
বেশ সুস্বাদুই ছিল তোমার যখন তখন পরিবেশনা!!
কিন্তু এত সস্তা সহজলভ্য খাবার
যতই সুস্বাদু হোক তা আকর্ষনীয় না রহিমা।
তুমি জানো না বাঘের মুখে কাটা মাংসের স্বাদ,
আর জ্যান্ত হরিনীর ছটপটানি মাংসের স্বাদ এক না।
গায়ে কেবল মাংসই বাড়িয়েছ,,,
হারিয়েছ ছটপটানি।
ফ্রিজের আবদ্ধ বোতলের পানির চেয়ে
কারো মান অভিমানের বাধার দেয়াল ঘেরা
নলকূপের পানি যে অনেক মূল্যবান,অনেক সুস্বাদু!!!
তা তুমি বুঝবে না।
কোনদিন জ্যান্ত হরিণের স্বাদ যে পাও নি
কোন দিন বাঘিনীর দন্তে
আস্ত একটা মোরগ ধরেও যে খাও নি!
তার আগেই হয়ে আছ কেবল
ডিমওয়ালী মুরগী!


আচ্ছা রহিমা কেমন লেগেছিল সেদিন?
যেদিন তুমি তোমার পতি খদ্দের  হারাচ্ছিলে দিনে দিনে,,
যেদিন তোমার চোখের সামনেই
তোমার বালিশের ভাগ নিচ্ছিলো আরো তিন জনে?
কেমন লাগিছিল তোমার,
যখন তুমি তোমার বিছানা হতে হয়েছিলে উচ্ছেদ?
কেমন লাগছিল তোমার
ছেড়া ত্যানা দেহটির সংখ্যালঘু  রূপ দেখে?
কেমন লাগছিল তোমার যখন তুমি ময়ুরী হয়েও
মেঘের সম্মুখে মেঘ অচ্ছুতা?


কেমন লাগে রহিমা আজ তোমার পাশের বালিশটি?
বকুল ফুলের ঘরে শিউলি,গন্ধরাজ,বেলির ঘ্রাণটা মানতে দেয় তো তোমার ঈশ্বর?
শুন্য বিছানার চাররাতের হিসাবটা কী বুঝে
তোমার হৃদয়?
সম অধিকারের ধর্মীয় ভাষাটা কি জানে
তোমার বিছানার উচ্ছেদ অভিযান?
বালিশটার অভ্যাস হারানুর শোকগাথা
আর তোমার হৃদয়ের হাহাকার?
জানে কি এই ঘরের দরজা দিয়ে
তোমার অন্তরের প্রস্থান কারো আগমনের তরে?
জানে কি রহিমা
জানে কি এই বিশ্ব  তোমারে?


জানবার ইচ্ছা হয়তো কারো নেই,,,
নতুনের মোহে পুরাতনের
হিসাব বুঝিয়ে দেওয়াটাই যেন মোক্ষম।
যে হিসাবে রাত আছে,বিছানা আছে, দালান আছে,শাসন বারণ রাজা আছে,,,
থালা ভর্তি খাবার আর ঘড়ি ভর্তি যৌনাঙ্গ!!
নেই কেবল তুমি।
আর তোমার অনুভুতি,আত্মমর্যাদার অনুভুতি।


রহিমা এ বাড়িতে নতুন পথ গুলোর চেয়ে
তোমার পথের উপর পথিকের পা শুন্যের কোটায়।
তোমার পথে তুমি ভিখারিনীর আনাগোনা,,
অসহ্য হৃদয়টার গ্রিল,রোস্ট,তান্দুরী,
নাগা মরিচের সাথে নাগিন জ্বাল ভুনা।
আর অপমানের এক সুন্দর পৃথিবী।
যেমনটি সুন্দর তোমার আলাদা বিছানা,
আলাদা  ঘর আর আলাদা আতর।
এ আলাদা এক পথ হতে অন্য পথের
এ আলাদা এক ছাদ হতে অন্য ছাদের
এ আলাদা এক ভুষণ হতে অন্য ভুষণে।
এ আলাদা তিনের সাথে একের
এ আলাদা জীবনের সাথে জীবনের


শুধু  
যৌথ  বেশ্যা এক পতিত স্বামীর
পতিত যৌবনের।


----------------------------------------
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস