আর এ থেকে দূরে থাকা যায় না
বিল্ব পত্রের অগ্রভাগের মত ডুব দিয়ে
অনিচ্ছার ঘিয়ে
নেমে পড়তেই হয় স্মৃতির যজ্ঞে ।
কবে সেদিন এসেছিলো পথ হারানু পানির বেগ
আদরের হাওরের বুকে ,
দই মাখানু মাখনের মত
বসে গিয়েছিল সুবোধ বালকের শখে
গ্রামটির চারপাশে ।
হেলিয়া দুলিয়া করেছিল খেলা নিরন্তর
ছুইয়ে ছুইয়ে ছুয়েছিল ভালবাসা পরস্পরে ,
নেমেছিল অবুঝ খেলায় বিড়ালের
পায়ে পায়ে,
হংস তাড়নার নেশায় নেমেছিল আহ্লাদ
নেমছিল সুখ
প্রহর প্রহর পরশে ।
এ যেন জনপদ নয়
নয় কোন মানবের স্মৃতিচিহ্ন ,
পিপীলিকার দল ভাসিছে দূর থেকে দুড়ান্তরে
কচুরী ফেনা থেকে নয় কোন ভিন্ন ।
সেথায় ছিলাম
কোন এক বালক হয়ে; হয়ে দুরন্ত ,
নিত্য আলিংগন সুখে করেছি সাঁতার অনিশেষ
দিয়েছি ডুব ওই শামুকের সাথে ,
ধরেছি মাছ কিবা শাপলার ডগা
নৌকায় নৌকায় বসে ,
কেটেছি কলমী ফুল হাওরের ঢেউ হারিয়ে ,
চিংড়ি পায়ে হেটেছি কত
চ্চাই সদনের ব্যুহে ।
কিনারায় বসি দূর প্রান্তে
যত খানি গিয়েছে চোখ , স্বপ্ন সারেং হয়ে
ভাসিয়েছি তরীর বুক
বাজিয়েছে কোন বিয়ের বাজনা
সানাইয়ের সুরে বিকালে,
ট্রলারের আওয়াজ এসেছে কত
পাগল হয়ে মোর কানে।
দিক বেদিক ছুটা ছুটি ,
অবুঝ বাসনায়
আমি যে ছিলাম তীরের নাবিক
তা বুঝে নি কেহ অবহেলায় ।
সাদা ফনায় ঢেউয়ের ডগায়
খেলিয়াছিল যে
বৈঠা সাহসে,
সে আমার ছিল প্রাণ
অন্তরের বিন্যাসে ।
আমিই ছিলাম
ছিলাম সেথায়
জলে দাড়ানু সাধু গাছের পাশে
কাক কিবা মাওকড়সা বেশে ।
যে সন্ধ্যা বাতি ঝিলিকে ঝিলিকে
আনিত
হঠাত উলুধ্বনির আর দু একটা মাছে
টুপ টুপ ,
কেরাত কেরাত দাড়ের লয়ে
গৃহিনীর রান্নায় হয়ে যেতাম চুপ ,
চুপ হয়ে পূর্নিমা লোকে
উঠানে শুইয়া পাটিতে
ঢেউয়ের শব্দে ঢেউ গুনিতাম
জলের গন্ধ সাথে ।
সেথায় আমি মগ্ন ছিলাম
ছিলাম মনোযোগি
বর্ষার গ্রামে ছিলাম ওরে
সত্যিই উপযোগী ।
দল বাধিয়া যে বালকে করিত
সারা বেলা স্নান ।
সেথায় আমি ছিলাম বন্ধু
ক্লান্তি হীন অম্লান ।
ছিলাম আমি ধানের নৌকায়
কাঠাল গন্ধের সুখ ।
ছিলাম সেথায় স্বপ্নের মত
স্বপন ভরিয়া বুক ।
যাহা আজ হোমে খুঁজি
পতিত ভিটার
বাসনায় ।
তা বড়ই ভাগ্য আমার
আসে যে
স্মৃতির দরজায় ।