কৃষ্ণ বাঁশি বাজাতে পারবে আবার?
পারবে তো?
আমি যদি তোমাকে সিলেটের জকিগঞ্জে
রাকেশ বাবুর উঠানে নিয়ে যাই,
সেখানে তোমার বাঁশিতে সুর জাগবেতো?
যদি তোমাকে হাত ধরে ধরে আফগানিস্তানের অলিগলিতে নিয়ে যাই,,,
তুমি পারবে?পারবে সেখান থেকে একজনকে
রাধার মত তোমার বংশির ধ্বনী শুনাতে?
পারবে কৃষ্ণ? পারবে তুমি?
পারবে বাজাতে বাঁশি?
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নামটার
প্রতিটা প্রকাশ্য বা গোপন সংবাদ শিরোনামে?


তুমি তো দ্রোপদীর বস্ত্র বাঁচিয়েছিলে!!!
তাই না?
খুব গর্ব হয় আমার; খুব গর্ব হয় তাতে।
কিন্তু পূর্নিমা শীলের কাপড় যখন ছিড়ছিলো
শ শ শকুন উল্লাসে উতফুল্লে?
তখন তোমার ভান্ডারে কী
কাপড় শেষ হয়ে গিয়েছিল কৃষ্ণ?
বাংলার পুজা আর পশ্চিম বাংলার ছোট্ট মেয়েটির জন্যেও আর কোন কাপড় নেই তোমার কাছে?
নেই দু বছর থেকে আশি বছরের বৃদ্ধার জন্যে কোন বস্ত্র?


কীভাবেই থাকবে? ওরা তো আর পাঞ্চালী  নয়
ওরা তো থাকে রাস্তায়,ঘরের কোনে কিবা
সংখ্যালঘু নামটার ভয়ার্ত নরকে।
ওরা তো রাজনন্দিনী নয়,,,
তোমার বন্ধুর পত্নীও নয়।
ওরা কাজের মেয়ে,কারো সৎ কন্যা,কারো নাতনী
কারো পুত্র বধু,কারো অফিস সহকারী,,,,
ওদের জন্যে মোদী বাবুর দোকানেই কাপড় নেই
মমতার ভান্ডারে কোন মমতা নেই,,,
আর হাসিনার রাজ্যে তো
ওরা হয় মালোয়ান না হয় যবন!!


কৃষ্ণ খুব কষ্ট হয়!
ভয়ে গা টা কেপে উঠে,লোম গুলো সোজা হয়ে যায়,
হরিণের কানের মত
আওয়াজ শুনতে পাই শুকনো পাতার।
চোখ গুলো চারদিকে ঘুরে আর ঘুরে
আর ভাবি,,,,,
ভাবি আজ তোমার রাধিকা থাকলে এখানে
তুমি কী পারতে এভাবেই বাশি বাজাতে?
ভারত বর্ষের যেকোন বাসে,ট্রেনে,নৌকায় লাঞ্চিত হলে
তুমি কী পারতে কৃষ্ণ? পারতে রাধা রাধা বলে চিতকার করতে?
কে জানে আজ তোমার রাধা এখানে থাকলে
কেউ  তার মুখে এসিড মারতো না?
কেউ  টিভি সিনেমার পর্দায় দেখে শিশ মেরে উঠত না?
রাস্তায় একা একা পেয়ে ঝাপটে ধরত না?
কে জানে তোমার রাধার পচা গলিত দেহ মিলতো না ড্রেনে,খালে।
তোমার রাধার ফাস লাগানু মূর্তি মিলতো না
অফিসে,হোটেলে,বাসায়,কলেজে,,,,,,,?


কৃষ্ণ তাহারুশের মাঠে অনেক দ্রৌপদী কাঁদে
পহেলা বৈশাখের মাঠে  অনেক রাধার ক্রন্দন জাগে
,জাগে পুস্তকে,পত্রিকায়,টিভিতে
জাগে সংসদে,রাজপথে,বস্তিতে,গার্মেন্টেসে
কই কই কৃষ্ণ তুমি কোথায়?
কোথায় কৃষ্ণ কৃপাসিন্দু দ্বীনবন্ধু কোথায় তুমি?
কোথায় তোমার বাঁশি? কোথায়?
রাধা দেহের দাম যে বেশ বেড়েই চলছে
কসাইয়ের গোপন পশরায়?


কৃষ্ণ পারবেতো, পারবেতো তুমি?
বাজাতে বাঁশি এ জমানায়?
------------------------------------------------------------------
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
২৪/০৭/১৭