সেদিন বাপের মৃত্যু বার্ষিকী
   সকালে স্নান সেরে,
মেয়েটি রাখলো তাজা ফুল
   বাপের চরণ পরে।


সেদিন মালিকের ভাত বানাতে
   হয়েছিল কিছু দেরী,
মালিক গিন্নী মেয়েটির খাবার
   থালাটি নিল কাড়ি।


বলেন, তোরে দেব শিক্ষা
   দুদিন উপোস কর,
বুঝবি তাহলে ফাঁকির মজা
   এটা আমার ঘর।


এমনি করে সারাটা বছর
   পায় শত উপহার,
কখনো ছেঁকা কভু মার
   ক্ষত ভরে চারধার।


রাতের আঁধারে তারাদের পানে
   খুঁজে ফেরে বাপেরে,
বলে আছি ভালো আমি
   এই পৃথিবীর পারে।


দিনের পরে দিন যায়
   অবহেলা অনাদরে,
শত আঘাত সহ্য করে
   অবিচল রয় নীরবে।


নাম নাজানা ফুলের মতো
   বিকশিত ফাগুনে হলো,
কুঁড়িতেই এসেছিল আজ
   হলো বছর ষোলো।


বসন্ত এসেছে মন জুড়ে
   দেহতে পলাশ ফোটে,
কোকিল গায় অচেতন মনে
   মন অজানায় ছুটে।


দখিন পবন বসন্ত ঋতু
   চেনেনা ধনী  গরীব,
জানতে চায়না কোনো কিছু
   কেবা ঘরের মনিব।


মেয়েটি পরলো প্রেমের জোয়ারে
   ছেলেটি বিশের কোঠায়,
ছেলেটি তখন শ্রমিক ছিল
   কারখানায় লোহা পিটায়।


বাহির হলো মেয়েটি সেদিন
   বিশ্বাসের পথ ধরে,
বিয়ে করলো দেবতা সাক্ষী
   ফিরলো তারা ঘরে।


বলে মেয়েটি খুব সাবধানে
   এতদিন তোমার ঘরে,
কাটিয়েছি দিন সুখ দুখে
   বিদায় দাও মোরে।


গিন্নী আগুন তেলে বেগুন
   অভিশাপ দিয়ে বলে,
কিনেছি তোকে অজস্র টাকায়
   শোধ কর ভুলে।


ছেলেটি বলে স্পষ্ট করে
    ঋণের মাত্রা বলুন,
ছাড়তে যদি না চান
   আইনী পথে চলুন।


ভীত হয়ে মনিব গিন্নী
   বলেন নীচু স্বরে,
মেয়ের মতো রেখেছিনু তারে
   এতটা দিন ধরে।


মিটিয়ে ঋণ গেলো মেয়েটি
   ছেলেটির হাত ধরে,
মনিবের ঘরও বেসেছিল ভালো
   চোখখানি তার ভরে।