হবে তখন অনেক ভোর
   মোরে ডাকে কে?
চোখ খুলতেই চমকে উঠি
   রবি ঠাকুর এযে!


ওঠ শীঘ্র তৈরী হবি
   বলেন তিনি হেসে,
ডাক এসেছে যাব সুদূর
   নৌকা নিয়ে ভেসে।


সোনার তরী পৌঁছে গেছে
   ছুটবে আমায় নিয়ে,
ক্ষণিক সঙ্গ দে আমায়
   ঘাটের কাছে গিয়ে।


পৌঁছে দিয়ে ফিরছি যখন
   বসে দাওয়ার মাঝে,
পাতার পর ভরছে পাতা
   লেখেন তিনি কি যে।


রেগে আগুন তেলে বেগুন
   বিদ্রোহী কবি নজরুল!
খোদার ঘরে লাগিয়ে কপাট
   করছে ওরা ভুল।


মোল্লা পুরুত তাড়ায় মানুষ
   লিখবো করতে জব্দ,
উচিত শিক্ষা দেবো তাদের
   যদি করে শব্দ।


বলি তাকে শান্ত হউন
   ভাবতে হবে কিছু,
মোল্লা পুরুত বেড়েছে খুব
   রাখবো দৃষ্টি পিছু।


অনেক বুঝিয়ে শান্ত করি
   মাথায় বরফ দিয়ে,
জসীম উদ্দীন বলেন আমার
   ঔষধ আয় নিয়ে।


ছুটে গেলাম তার কাছে
   কি হয়েছে শুনি,
হাতের ব্যথা জোর দিয়েছে
   কষ্টে বলেন তিনি।


বলেন মোরে কি আর বলি
   লিখে ফেললাম কবর,
তারপরে হাতের ব্যথা
   উঠছে দিনভর।


ঔষধখানা আনতেই শুনি
   চোরকে আন ধরি,
সুকুমার রায় বলেন কারা
   গোঁফ করেছে চুরি।


চেঁচামেচি শান্ত হলো
   দেখে নিয়ে আয়না,
খুব কমই লোক বোঝেন
   গোঁফের কদর খানা।


একটুখানি জিরিয়ে নিতে
   সুকান্তর পাশে বসি,
বলি তারে কেমন আছেন
   দিয়ে মলিন হাসি।


বলেন তিনি নেইতো ভালো
   খারাপ মোর মনটা,
এতো ভেজাল খাবার পরে
   বাঁচবে বল প্রাণটা।


বুঝিয়ে বলি শান্ত হউন
   খাবেন ডাবের জল,
সব চিন্তা দূরে যাবে
   পাবেন ভালো ফল।


বাগচী মশায় ভারাক্রান্ত
   নেই কাজলা দিদি,
খেলার সাথী হারিয়ে গেছে
   চুরি করেছে বিধি।


নীল ব্যথায় বুকটা তার
   টনটন করে!
আমরা দুজন কষ্টে কাঁদি
   দিদি নেইতো ঘরে!


দীনেশ কবি মাতামাতি
   করেন নিয়ে কাস্তে,
বলি আমার হাতে দিন
   যত্নে রাখি আস্তে।


কি করতে কিযে হয়
   আঘাত বুঝি পান,
আমার কাছে রেখে দিয়ে
   নিশ্চিতে শুতে যান।


জীবনানন্দর বনলতাকে
   খুঁজি হেথায় হোথায়,
প্রকাশ করতে যেতে হবে
   রেখেছেন কোন পাতায়।


বলি তারে আমার পরে
   ভরসাটুকু রাখুন,
ঠিক তারে খুঁজে দেবো
   শুধু আপনি দেখুন।


এদিকে ওই ইলসে গুঁড়ি
   দুলছে হাওয়ার পরে,
তাই দেখে সত্যেন্দ্রনাথ
   নানান স্বপ্ন গড়ে।


বলেন মোরে ছিপটা আন
   ধরতে যাব ইলিশ,
সাবধানে আয় পা টিপে
   দেখা পেলে বলিস।


পরে দেখি মধুসূদন
   অনুশোচনায় ভরে,
সময় গুলো গেলো চলে
   পাবেননা আর পরে।


বলি তারে এখন রাত
   কালকে জাগুন ভোরে,
দেখতে পেলে সময়গুলো
   আনবো বন্দি করে।


এমনি করে স্বপ্ন মাঝে
   কাটে আমার বেলা,
সব কবিদের পাতায় পাতায়
   জমে ওঠে মেলা।


আসবেনকি আমার  সাথে
   আমার মনের ঘরে?
সবাই মিলে তারা ঘুমায়
   প্রাণের দেওয়াল পরে।


পাহারাদার আমি তাদের
   সতর্ক সবসময়,
ক্ষতি বুঝি হয় তাদের
   চিন্তায় হয় ভয়!


রাতের বেলায় ঘুমের ঘোরেও
   প্রহর গুনি ঘন্টা!
তাদের পানে নজর শুধু
   সজাগ রয় মনটা।