ঠাকুরপো, তোমার শেষ পাঠানো লেখাগুলো পড়েছিলাম,
হয়তো তুমি আমার ভালোলাগার কথা, কিছুটা হলেও ভেবেছিলে।
আমি বেঁচে থাকতে শেষে তোমার উপর  ক্ষণিক
অভিমান করেছিলাম।
পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও!
আসলে ওই নিঃসঙ্গ জীবনে তোমাকেই শুধু সজীব মনে হতো!
বাকিটা সবই জড় ছিল!
কিন্তু তুমি যখন আসা বন্ধ করে দিলে,
মনে হল এপৃথিবীতে বড্ড বেমানান আমি,
কোথাও ধরেনা আমার অস্তিত্ব,
নিজেকেই নিজের বোঝা লাগতো।
হ্যাঁ সেদিন খুব হাল্কা লেগেছিল,
যখন অগুন্তি ঘুমের পিলগুলো একসাথে…
মনে হচ্ছিল আমি যেন মুক্ত বিহঙ্গ,
পাড়ি দিলাম নীলের মাঝে।
তোমাদের বড়ো বড়ো জানালা দরজা কড়িকাঠ
আমাকে মায়ায় বাঁধতে পারেনি...
তবে সেই ছাদের নন্দন কাননের একটা গোলাপ
তার রক্ত লালে আমাকে আচ্ছন্ন করেছিল।
না আমার নিঃসঙ্গ জীবন সমুদ্রে
কাউকে পেলামনাগো ধ্রবতারা রূপে!
তোমার প্রতি আমার অভিযোগ নেই,
তুমি আমার বন্ধু বলো,
কিংবা চলার পথে দেখা হওয়া
ক্ষণিকের অতিথি বলো,
কিছুটা তুমি ঋণী করে গেছো আমাকে।
তুমি তোমার ঘরে নতুনকে আহ্বান করলে,
তোমাকে ছুঁলো নতুন পৃথিবী।
আমি সন্তানহীন, পতি পরিত্যক্ত একজন নারী!
রাতের আকাশে হাজার তারার নীচে
কি চাইতে পারে নিজের জন্য পরম পুরুষের কাছে
বলে দিতে পারো?
পরিত্যক্ত বলতে কাগজে কলমে নাহলে কি
পতি ছাড়া নারীকে সেকথা বলেনা?
জানো,  তোমার দাদার কাছে
শুধু একটা রাত চেয়ে ছিলাম,
বোঝাতে চেয়েছিলাম,এআমার মন
তোমাদের খেলনা না,
আমারও কিছু স্বপ্ন আছে,বাঁচার অক্সিজেনে অধিকার আছে,
ওর চাহনির তীক্ষ তীরে আমি বারবার বিদ্ধ হতাম।
আমার কালো রূপের সন্ধ্যায় যে
বেলীর সুবাস ছড়ানো রয়েছে!
তার গুরুত্ব আমি পায়নি কোনোদিন!
ঘরের দামী আসবাবের গুরুত্ব বোধহয় বেশী আমার চাইতেও!
কি করি বলো?
তাই আমি ইচ্ছে ডানা মেলে দিলাম...
আজ আমি মুক্ত!
তোমার নতুন বৌঠান  নব জন্মের দ্বারে বসে,
নতুন জন্ম তাকে আর প্রতারণা করবে না
শুধু এটুকু বিশ্বাস নিয়ে আমি চললাম...
নতুন চলার এই গতি  প্রাসাদের দরজাগুলো আর
বন্দী করতে পারেনি।
আমি অনন্তকাল চলতে চাই...
তাইতো মিথ্যের বন্ধন হতে বেড়িয়ে এলাম।
মুক্ত হয়ে বাঁচতে চাই…আলো চাই, প্রাণ চাই...
তাইতো প্রাণহীন দেহটা ফেলে চলে এলাম।
বেঁচে থাকতে যার মনের খবর কেউ রাখেনি,
চলে যাবার পর  জানি সবাই চাইবে
তার মনে বয়ে যাওয়া ঝড়ের  খবর নিতে।
মিডিয়া, খবরের পাতা,লোকের মুখে মুখে আরো কতো কি...
যা নিছক হাস্যকর,প্রবঞ্চনাময়।