খরস্রোতা নাফ তোমার বুকে ভেসে আসা
রক্তস্রোত জলে জলে সীমান্ত পেরিয়ে
মানুষের বন্ধনকে করেছে সুদৃঢ়
সাক্ষ্য বাংলার টেকনাফ
ঘটনার নীরব সাক্ষী
আঁকা বাঁকা পাহাড় ঘেষে কুল ধরে
গেছো ভেসে দুর যেখানে খুশী
সম্রাট শাহজাহানের তৃতীয় পুত্র শাহসুজা
সপরিবারে দিয়েছে চিরজনমের ডুব
তোমার খরখরা বুকেই
ছাপান্ন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য তোমার
তিন কিলোমিটার চওড়া বুক
জানিনা কেমন ভালোবাসা
রক্তের হোলি খেলে যাচ্ছো ভেসে
এ কোন্ কিশোরীর সিঁথির সিঁদুর
তোমার হয় না কী রাগ, ক্ষোভ ও মাতালতা ;
ঝড় জলোচ্ছ্বাসে উল্টো দিকে ঘুরে যেতে


এই যে আরাকান-আকিয়াব থেকে
আসে অপরিমাপক বহতা রক্তনদী
কানা চোখ নাকি অন্ধ, বয়রা, খোড়া বোধ
মানুষের মূল্য কী নেই একেবারেই
বণিকী ধর্মের চর্চিত পশুত্ব উল্লাস
ধর্ম না হোক, নয় কী ওরা মানুষ
শুধুই রাখাইন-রোহিঙ্গা


মানুষ প্রাণী ওরা কোনো যৌবনের মধুর নির্যাস
ঘোলাটে চোখে সুদূর ধূসর মেঘের গুচ্ছ
অপুষ্টির বিজ্ঞাপন ছুয়ে  আশরীর
মানুষ পরিচয় না হলে  
বেহিসাবি কেনো খায় মার ওরা!
কেনো ওরা হয়ে ওঠেনি হিংস্র কোনো প্রাণী
মানুষ হলে বুঝতে নাফ পরাধীনতা বলে কাকে
তোমার দেহে বাঁধ দিয়ে প্রবাহ বন্ধ করুক
পরিণতি তোমারও হবে রাখাইন
বিপন্ন মানুষের নির্যাতনের চিত্র
মাইক্রোস্কোপে ধারণ করছে
স্যাটেলাইট মনিটরে শিশু, নারী
বৃদ্ধ ও যৌবনের চরম অবহেলা
ধড় বিচ্ছিন্ন মুন্ডু, বিচ্ছিন্ন হাত-পা
ইয়াঙ্গুণ থেকে মান্দালয় আর স্থানান্তরিত
স্থিত ঐ নেপিডো’র সামরিক বাতাসে
পৌঁছায় না শিশুর বুকবিদ্ধ বুলেটের শব্দ


মানবতার উলঙ্গ পরাজয়
জ্যান্ত মানুষের চালতোলার উল্লাস
আরাকান টেলিস্কোপে চোখ রেখে
দেখে যাও পরিণতির ইতিহাস
প্রতিটি হত্যা হিংস্র শোধ হয়ে জমে উঠছে
ফুটবে গোলাপ কাঁটায়
যা তুমি গ্রহণ করে বয়ে চলেছো
অন্যের অসত্য গাঁথা
কালের ডিজিটাল ইতিহাস করবে না ক্ষমা যেনো
জেগে আছে দৌলত কাজী আর আলাওল’র কলম
চন্দ্রানী ও পদ্মাবতীর হাজারো নতুন নাম
অলক্ষে লিখছে বৃদ্ধ, শিশু ও নারী নির্যাতনের মহাকাব্য।