প্লিজ,বন্দী ভাববেননা(26-03-2020)
রণজিৎ মাইতি
--------------------
যারা এই মূহুর্তে হাঁসফাঁস করছেন,কিংবা বন্দিদশা থেকে দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম,তাদের বলি,একটু ঝেড়ে কাশুন,কফ আসলে শরীরের ক্লেদ,ছুঁড়ে ফেলুন ডাস্টবিনে।আপনার এক চিলতে সোহাগী আকাশে নাভিশ্বাস উঠলেও প্রাণায়ামের ভঙ্গিতে বুকে দুই কেঠো হাত চেপে জোরে শ্বাস নিন ও বাসি মুখে হাসি রেখে সেরে নিন সকালের সূর্যপ্রণাম।এতো দূষণ,এতো এতো এলোমেলো হাওয়া,চেনা আকাশও কতো অচেনা অজানা,কতোদিন ছুঁতে পারেননি বলুন তো!বরং এখন সন্ধ্যার আকাশেও আঁকি দু-কলি শান্ত ও নীরব সন্ধ্যা কিংবা অসংখ্য।


প্লিজ,কখনও বন্দী ভাববেন না নিজেকে,দূষিত হাওয়ার সাথে সন্ধিও নয়।ঘর কখনও খাঁচা নয়,তেমনই খাঁচাও কখনও ঘর হয়না।বরং মোক্ষের পেছনে ছুটতে ছুটতে মনের অজান্তে এতোদিন মোক্ষম খাঁচা রচনা করেছেন নিজেরই চারপাশে,সেটাকেই নীলাকাশ ভেবে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মনপাখি।অথচ স্পর্শ-গন্ধহীন বিবর্ণ আকাশে দুই হাত শূন্যে ছুঁড়ে শালু ওড়াতে ওড়াতে কঁকিয়ে উঠেছিলেন অসহ যন্ত্রণায়।যদিও বাইরের চতুর আকাশ সেটাকেই সুখ বলে প্রচার চালায়!


মনে রাখবেন,প্রকৃত আকাশ কখনও বন্দী হয়না,করাও যায় না তালুবন্দী।বরং আকাশ হয়ে ওঠে ভজনালয়,গয়া কাশি মথুরা বৃন্দাবন,মক্কা-মদিনা,ভাটিকান সিটি,সে প্রেমিক থেকে খলনায়ক,আবার কাফের থেকে হয়ে উঠতে পারে মহান চলচ্চিত্রের উদার ও বীর নায়ক।চিনির দানা ভাঙতে ভাঙতে চিনে নিতে পারে অনু-পরমানু,খুঁজে নিতে পারে ব্রহ্মশক্তি,হর হর মহাদেব,গঙ্গার উৎসস্থল।


তাই আসুন,এটাই তো যথার্থ সময়।বন্দি না ভেবে খণ্ড খণ্ড করুন নিজেকে।দুরমুশ দিয়ে চুর্ণ বিচুর্ণ করুন বিচুর্ণদম্ভ।কে,কি,কেনো প্রশ্নে বিদ্ধ করুন বারবার।উৎস,উৎস থেকে মোহনা,তারপর অকুল পাথার।এমন সুযোগ সবসময় আসেনা জীবনে।হয়তো অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার এটাই সেই সন্ধিক্ষণ।বন্ধ ঘরে চুমকি দেওয়া শাড়ির আঁচলে হাত বোলাতে বোলাতে বলুন, 'তুই-ই আমার প্রিয় আকাশ,স্নিগ্ধ বাতাস ও মুগ্ধ মনবাতায়ন।' প্রিয়জনের স্পর্শে বুঝে নিন,হিমঘর ও অমরত্বের তফাত কতোটা।


জানবেন,এই মহাবিশ্বে যতোদিন মানুষ আছে,হৃদয় যতোই কাতর হোক,কেউ না কেউ শোনাবেই মুগ্ধ আশাবরী,বিবেক ও মুক্তির গান।