শ্রদ্ধাঞ্জলি
---
(কবি আসাদ চৌধুরীকে)
---- রমেন মজুমদার,05/10/23

হৃদপুর্ণ সুখ-অসুখ,কম্পিত প্রহসন!
গঙ্গা-পদ্মা-বুড়িগঙ্গার তটিনীর স্রোত;-
দেখেছ কবি তুমি অচঞ্চল বুক ভরে,
বেগবতী মনোরমা শোকার্ত গর্ভধারিনী
জননীরা জন্মে বঙ্গের, বিচিত্র মাটির গন্ধে।

তোমার কলম বলেছে প্রতিবাদী ভাষার কথা!
ঋণভার,শত্রুর মোকাবেলায় কঠিন গর্জন;
হুঙ্কারে তর্জনী যার, প্রতীকী তোমাতে বিলীন;
শত্রুরাও ক্ষয়ে ক্ষয়ে দিয়েছিল সীমানা পাড়ি
ক্ষত-বিক্ষত বঙ্গের মাটি!বলেছিল কথা
তোমার কবিতায়।

ফজরের আজান শেষে বিগরিত যৌবন;
হুঙ্কার,ধিক্কার!তর্জন-গর্জন  প্রতিটি শিরাউপশিরায়
দিয়েছিল রক্তঢেলে মুক্তির তরুণ দলে--
তুমিতো সেই সেনানী মুক্তির আগুয়ান!
লজ্জা ছেড়ে এসেছিল তব সাথে
বেগবতী পোয়াতি যৌবনা নারীর দল।

শুনেছ প্রাচ্যের গান,স্বার্থ লোলুপ হায়েনার
হুঙ্কার!
প্রতিটি অস্ত্রে,তার সমুচিত জবাব দিলে
বঙ্গের সন্তান হয়ে মানুষের নির্মোহ কল্যানে;
রহস্যময় আতঙ্ক কাটিয়েছিলে, হে বীর!
কলম যোদ্ধাদের নিয়েছিল আঁচলে তুলে
বঙ্গের স্বাধীনতায় তোমার অমূল্য অবদান।

দেখেছি তোমারে মৃদুহাস্য কোমল অন্তর...
পাহাড়ের মত বুকখানি ভরে নিয়েছিলে ব্যথা!
সকল মানুষের তরে দিয়েছ পথচলার
মৃন্ময় আশ্বাস;
তুমি কবি,শুধু কী কেবলই কবি বঙ্গের ঘরে ?
দেশ থেকে দিয়েছ পাড়ি পৃথিবীর একোণ-ওকোণ।

সুতীব্র চম্বুনের শব্দে গ্রথিত হয়েছে কাব্যভূষণ,
পর্দা চিরে বেরিয়ে এসেছে কবিতার রানী
সাজিয়েছ নানা রঙে আবিরের ধূসর তুলিতে;
সূর্যকে প্রণাম সেরে দিয়েছ উপহার একটি
লাল পতাকার।

একটি জন্মের তিক্ত উপহারে রঞ্জিত হয়েছে মাটি
শুধু লাল রক্তের স্রোত সেই পদ্মার অববাহিকায়,
কেঁদে কেঁদে গিয়েছে ভেসে গঙ্গার বুকে!
তবুও তোমার থামেনি কলমের যুদ্ধ সেদিন
মুজিবের আহ্বানে মুক্তির এক অমর দলিলে
দস্তখত করে লিখেছিলে নাম তব আসাদ চৌধুরী-
তুমি আছ,থাকবে অনন্তকাল বঙ্গের বুকে।

অবুঝ কিশোরীর কান্নায় ভেসে গেছে তোমার কলমের কালি!
জননীর বীরাঙ্গনায় ঝরেছে শরীরের রক্ত!
অস্ফুট গোলাপেরা জানিয়েছে স্যালুট
হে বীর! হে চিরান্তনী মানববোধের কবি
তোমার অন্তরে যীশু- আল্লা-ভগবানের
আশিস;
জন্মেছিল উদার ভাবনার মানস চিত্তে।
আজ তোমাকে জানাই হাজার জনমের রক্তিম স্যালুট।।
---- কলকাতা থেকে।।