এই আমিতে সেই তুমি নেই
----------
রমেন মজুমদার
26/09/23
গিয়েছিলাম তোমার নিমন্ত্রণে, তোমার বাড়িতেই;সে এক সাত জন্মের বাঁধনে।
মনেই হলো,
শুরু হলো অনন্তকাল পথ চলা...
তোমার আমার নিমন্ত্রণ পত্রে ছিল বার্তা
একে অপরের সঙ্গী;
আমাদের এক বিছানায় যাওয়া।

সাতপাঁকের সময়;
মিলেছিল চার চোখের মিলন;
দেখেছিলাম, সিঁদুররাঙা কপাল;
বাবার বাড়ি ছেড়ে যাবার দুরূহ এক কান্না!
ভেবেছিলাম,তোমার কষ্ট!তোমার আদর;
যতন করে ভরব আলমারি;
ভরব মনের চিত্তশূন্য চাওয়া।।

হলো কোথায় ?
শোকেস ভর্তি জীবন স্মারক থরে থরে গোছানো।
রেখেছিলে তোমার হাতে সেই আমি'তে;
এই আমি যে ছন্নছাড়া সেই তুমি না থাকায়..
স্মৃতিগুলো ধুলোয় ভর্তি সঙ্গে তোমার ছবিও।।

বদলে গেছে জীবন মালিকানা----
নেই উষ্ণতা ফায়ারপ্লেসের পিছে!
চাইলেও মন,চায়নি তখন উষ্ণ তোলার ঢেউ;
লাজের দহন পুড়ছে কিছুদিন !
চাওনি পুড়তে নতুন করে যৌবনের সায়াহ্নে!
প্রথম তুমি কত আপন,কত সুখের ছিলে;
বদলে গেছে প্রেক্ষাপট;
তুমিও নেই, সেই আমিতে জীবন পথটি বিভ্রাট।

সেই তুমি পুতুল খেলার কতই সামগ্রী,
আলতো হাতে সাজিয়েছিলে শোকেস ভর্তি করে,
সাজিয়েছিলে বত্রিশ থেকে চল্লিশের ব্লাউজ;
ধীরে ধীরে হলো নিম্মগামী;রোগ শোকেতে
শুকালে তুমি...
সেনসেক্সটা  পথ হারালো মাঠে;
সেই তুমি নেই এই আমিতে জ্বললো দহন চিতা!

নেই শব্দ আর নুপুরের ধ্বনি,
নেই হাসি সেই মিষ্টিমাখা মুখ;
দিব্যি বেণী দুলেনা আর দুই উরোজের পরে;
খাঁ খাঁ করা সাজানো ঘর আধাঁর করছে গ্রাস!
নেই তুমিতে, সেই তুমিতে; ঝলছে যাচ্ছে
পাষাণের কান্না!
এই আমিতে বিরহবুক কাঁচের মত টুকরো;
হয়েছি খান খান।

এখন আমি বিরহ যন্ত্রণায়--
যাচ্ছি পুরে ইটের ভাঁটায় পোড়া ইটের মত!!
খাঁ খাঁ দুপুর রেলপাতের উপরে;
ট্রেন-চাকায় লক্ষ টুকরো হচ্ছি দিনে রাতে!
সেই তুমি নেই, পুড়লে কেওড়াতলায় ...
শ্মশান চুল্লির দগ্ধচিতায় কী যন্ত্রণা বুকে!!
সেই দহনে এই অমিতে পুড়ছি জনম ভরে।

সেই আমিতে সেই তুমি নেই
ক্ষণে ক্ষণে হারাচ্ছি খেই জীবন নদীর বাঁকে !
ভাবনার অনুকূলে, তোমার স্মৃতি শেষ ভরসায় আছি আমি অর্ধমৃত --এই অমিতে সেই তুমি না থাকায় ।।
******
হরিদেবপুর।