চতুর্দিকে বহ্নিবাষ্প শূন্যাকাশে ধায় বহুদূরে,
     কেন্দ্রে তার তারাপুঞ্জ মহাকাল-চক্ররথে ঘুরে।
          কত বেগ, কত তাপ, কত ভার, কত আয়তন,
                   সূক্ষ্ম অঙ্কে করেছে গণন
          পণ্ডিতেরা লক্ষ কোটি ক্রোশ দূর হতে
                        দুর্লক্ষ্য আলোতে।
               আপনার পানে চাই,
          লেশমাত্র পরিচয় নাই।
     এ কি কোনো দৃশ্যাতীত জ্যোতি।
কোন্‌ অজানারে ঘিরি এই অজানার নিত্য গতি।
     বহুযুগে বহুদূরে স্মৃতি আর বিস্মৃতি-বিস্তার,
               যেন বাষ্পপরিবেশ তার
     ইতিহাসে পিণ্ড বাঁধে রূপে রূপান্তরে।
"আমি' উঠে ঘনাইয়া কেন্দ্র-মাঝে অসংখ্য বৎসরে।
সুখদুঃখ ভালোমন্দ রাগদ্বেষ ভক্তি সখ্য স্নেহ
          এই নিয়ে গড়া তার সত্তাদেহ;
     এরা সব উপাদান ধাক্কা পায়, হয় আবর্তিত,
                   পুঞ্জিত, নর্তিত।
          এরা সত্য কী যে
               বুঝি নাই নিজে।
          বলি তারে মায়া--
যাই বলি শব্দ সেটা, অব্যক্ত অর্থের উপচ্ছায়া।
               তার পরে ভাবি,
এ অজ্ঞেয় সৃষ্টি "আমি' অজ্ঞেয় অদৃশ্যে যাবে নাবি।
     অসীম রহস্য নিয়ে মুহূর্তের নিরর্থকতায়
          লুপ্ত হবে নানারঙা জলবিম্বপ্রায়,
     অসমাপ্ত রেখে যাবে তার শেষকথা
                   আত্মার বারতা।
     তখনো সুদূরে ঐ নক্ষত্রের দূত
ছুটাবে অসংখ্য তার দীপ্ত পরমাণুর বিদ্যুৎ
                   অপার আকাশ-মাঝে,
                        কিছুই জানি না কোন্‌ কাজে।
বাজিতে থাকিবে শূন্যে প্রশ্নের সুতীব্র আর্তস্বর,
                   ধ্বনিবে না কোনোই উত্তর।