আজ আমি মুক্তভাষী হব,
এই সমাজের মুখোশ খুলিব;
সাধু কিংবা ভদ্রজন এ কাব্যটি কোরো না পঠন-
বিনষ্টের মগজে মুক্ত কথনে মধুর বিষ ঢালিব।


আমি আঠার বছরের যুবক,
নিয়মের বেড়ি আমাতে নিরুৎসুক;
আমার চক্ষে শকুনের দৃষ্টি করে নষ্টের তলব,
আমি বিনষ্টকে করি শিকার যত নিভৃতে ঘটুক।


ভাসছে যুগ আজ আধুনিকতায়,
কাল-বিনাশী প্রযুক্তির ছোঁয়ায়;
ছড়াছড়ি বিষের বাক্স যুবক যুবতীর হস্তমুঠোয়,
মোহিত কালো তৃষ্ণা আর নীল ছবির আসক্ততায়।


প্রেমের বাজারে অপার,
চলে রমরমা কারবার;
যুবক চায় দেহ আর যুবতীর অর্থ-মোহ এইতো প্রেম,
বিনষ্টের কবলে মনুষ্যত্ব টুটে হীন স্বার্থ লুটে যার যার।


থৈ থৈ যৌবনে হৈচৈ মেলা,
রন্ধ্রে রন্ধ্রে রাধাকৃষ্ণের খেলা;
নব যৌবন যেথায় লুটায় নির্বাধ অবৈধতায়,
সেথা ক্ষুণ্ণ হয় বিবেক মনুষ্যত্বের সূচনা বেলা।


সেই ক্ষুণ্ণ বিবেকের বিকাশ,
কতদূর বা পাবে অবকাশ!
পূর্ণ যৌবনের হিসেবে নামে অসঙ্গতির ছায়া ঢল,
যার গোড়াপত্তনে ছিল নষ্টামির হীন সূচনাভাস।


বালক-বালিকা বয়স যার পাঁচ-ছয়,
ওরাও বোঝে যৌনতা কারে কয়!
কৌতুহলীর বশে ক্রমেই পারদর্শী হয় সর্বজান্তা,
আর হয় মাছে ভাতে পান্তা বয়োঃবৃদ্ধির পরিণয়।


প্রাথমিক শিক্ষাঙ্গনেই প্রেমে মজে,
যৌন সংঘর্ষের এ বিজ্ঞ সমাজে;
সেই অপূর্ণ বয়সের অপ্রস্ফুটিত জীবন লয় ভাঙন,
আর হয় না বিকিরণ যৌন-জালের বন্দী ঝাঁঝে।


প্রেম নদীর ঐ দুই পাশে,
মাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা ভাসে;
নব-নব যৌন চাষীর উর্বর মনে যৌন বীজ রোপে,
সে বীজের উদ্ভিদে যৌবন ঢালে বিনষ্ট অভিলাষে।


আর দেখি চেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক-
সে তো উচ্চ প্রেমাঙ্গনের প্রতীক;
যেদিকে তাকাই জোড়া বিনা দৃষ্টিতে না পায় ঠাঁই,
এইতো শিক্ষা মা-বাবা যার প্রতীক্ষা করছে ঠিক।


বিশ্ববিদ্যালয় নাকি পতিতালয়,
চলনে-বলনে বোঝা বড়ই দায়;
বৈবাহিক সম্পর্ক যেন এক তুচ্ছ ভগ্ন রেওয়াজ,
এদের মতো স্বাধীনতা গ্রহীতার বিবাহ কে চায়!


চারদিকে এত এত স্বাধীনতা,
বিবাহ সম্পর্কের খেলো মাথা;
তাইতো যখন-তখন এ অবমূল্যায়ন ঘটায় বিচ্ছেদ,
চাই না এমন স্বাধীনতা যার অন্তরায় পতন গাঁথা।


আঁটসাঁট দেহ ভূষণ পরিহিতা,
অর্ধ উলঙ্গ ষোড়শী দুহিতা;
যৌবন বিলায় আকাশে-বাতাসে উড়ন্ত ডানায়
বিহগের মতো বিচরণ যেন চরণ তলে পৃথিবীটা।


যুগের রঙে রঙিন আজ,
ক্রমবর্ধমান যুবক সমাজ;
কালো চশমার আড়ালে যার যৌনমাখা দৃষ্টি তীর,
আসে না নেত্রে নারীর ভূষণ ভাসে যত দেহ-ভাঁজ।


নারী উত্যক্ত সে তো পূর্ব প্রথা,
সম্প্রতি পুরুষ উত্যক্তের প্রবণতা;
কলি যুগে ঘুরছে রীতি, নির্লজ্জ মানসিকতার দলে
দিন-দিন ঢলছে মনুষ্য বাড়ছে পশুত্ব হারিয়ে মানবতা।


পোকাধরা মস্তিষ্কের পুরুষতন্ত্র,
বিকৃত চেতনায় ভরা উগ্র মন্ত্র;
ওরা মানবতার শত্রু যারা কোমলমতি তরুণীর ধর্ষক;
অচিরেই ঝরায় জীবন ওদের উৎখাত করো মৌল যন্ত্র।


সম্পর্কের হেতু ধরে যারা,
করে যৌনতা স্থাপন বিবাহ ছাড়া;
কুমারের ভার্জিনী আর কুমারীর সতীত্ব দিয়ে বিসর্জন,
মেতে ওঠে অবৈধ ক্রিয়ায় এ প্রজন্ম হয়ে আত্মহারা।


বিশের যুবতীর দেখি,
অবাধ চলন বলন সেকি;
বিবাহপূর্ব সম্পর্কেই অন্তরঙ্গ আলিঙ্গন সমর্থন,
যৌনতায় ভরপুর নোংরামি যার প্রেম তো মেকি।


শাড়ির আঁচল বাতাসে ছাড়ি,
কোমর দোলায় ত্রিশের নারী।
যেন বক্ষ যুগল থাকবে না তার বন্দী কোঠর,
পৃষ্ঠ-পেটে উলঙ্গমনা খুলে পড়তে চায় শাড়ি।


চল্লিশের জোয়ান গৃহে রয় সস্ত্রীক,
তবু দৃষ্টি লোলুপ বেগানার দিক;
সুযোগসন্ধানী শক্তি বা কৌশলে নারী কর্মীর সনে
যৌনাচারের তরে চিত্ত উত্তপ্ত লেলিহান দিগ্বিদিক।


ষাটের বৃদ্ধের সে চক্ষু দৃষ্টি,
যেন যৌবন ভরা মেঘের বৃষ্টি;
সে দৃষ্টির বৃষ্টি ঝরায় যুবতীর অঙ্গ জুড়ে সিক্ততায়, সমাধিতে এক পা এখনো যৌনথাবা চোখের কৃষ্টি।


নষ্ট পৃথিবী আজ হয়েছে ভার,
সভ্য কে! দেখি বিনষ্ট নির্বিকার;
সেই যোগসূত্রে আমার দর্শন পারেনি হতে বিচ্চুত,
তাই বিনষ্ট কাব্যে আমি চলছি করে নষ্ট শিকার।




॥ রচিত: ১১ নভেম্বর ২০১৮; আপন আলয়, বংকুরা, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ॥