তিমির রাতে হাতে মশাল নিয়ে হেঁটে চলেছি
একাকি নির্জন পথে যেখানে কারো দেখা নেই,
গাঢ় অন্ধকারে অম্বরে জ্বলছে কয়েকটি তারা
ঝিঝি পোকার ডাকে বাদুড়েরা করছে কোলাহল।


জানি আজ চিরতরে হারিয়ে যাব ভূ-মণ্ডল ছেড়ে
নয়নে পড়েছে মৃত্যুমুখী মাকড়সার মায়াজাল!
এতদিন আঁকড়ে ধরেছিলাম সকলের ভালোবাসা
জানি আজ চলন্ত নিশ্বাস চিরতরে থেমে যাবে!


তবুও সকলের সামনে করি বেঁচে থাকার অভিনয়
সবুজ মাঠের প্রান্তে শত কষ্টের মধ্যে,
যে কুঁড়ে ঘর তৈরি করেছিলাম আশ্রয়ের জন্য
আজকের পর শূন্য পড়ে থাকবে সেই আলয়!


জ্বলবেনা সন্ধ্যের পর সেখানে কোনো প্রদীপ
সকাল বেলায় তুলশির গাছে পড়বেনা জল,
দেওয়ালে ঝুলে থাকবে আমার বেরঙিন চিত্র
শূন্য পড়ে থাকবে উনমুক্ত সদনের আঙিনা।


ক্ষুধার জ্বালায় উড়ে আসা অগণিত শালিক পাখি
আজকের পর আর পাবেনা কোনো খাবার,
চেয়েছিলাম একদিন সুন্দর গগনকে ছুঁতে
তাই ছুটে গিয়েছিলাম ঐ শেষের সিমান্ত ডিঙিয়ে।


হারানোর বেদনায় হৃদয়ে জমে থাকা বীজ
ছড়িয়ে থাকবে অস্তিত্বের উর্বর ভূবনের মৃত্তিকায়,
ধীরে-ধীরে বুকের মধ্যে বাড়ছে মৃত্যু যন্ত্রণা
তাই বুঝি শুনতে পাচ্ছি এত কান্নার শব্দ!


এতদিন ঘন শিশিরের আবরণের মত
যাদের ভালোবাসা আমায় ঘিরে রাখতো সারাক্ষণ,
জানি আজকের পর ধীরে-ধীরে মুছে যাবে সবকিছু
জানি ভিজতেই হবে শেষ রজনীর বৃষ্টিতে!


তাইতো আমার সঙ্গে কোনো ছাতা রাখিনি
আটকাতে পারবেনা মৃত্যুরূপী বৃষ্টিকে কোন ছাতা!
তাই আজ মন না চাইলেও ভিজতে হবে
জীবনের শেষ মূহুর্তের শেষ ক্ষণের বৃষ্টিতে!


একদিন যে অন্তরীক্ষকে স্পর্শ করতে চেয়েছিলাম
হয়ত মৃত্যুর পর সেই ইচ্ছেটা পূর্ণ হবে!
নিথর স্তব্ধ হয়ে পড়ে থাকবে প্রাণহীন শরীর
অবশেষে গলে চিরকালের মত লুপ্ত হবে ক্ষিতিতে!


রচনাকালঃ- ০১/০৩/২০১৭