এক নতুন প্রভাত উদয়ের সাথে
প্রথম দিন শুরু হল বৈশাখী হাওয়া,
প্রখর গ্রীস্মের অনুভব জাগল মনে
পথে পথিকেরা করে আসা যাওয়া।
পুরোনো বর্ষকে চিরতরে বিদায় জানিয়ে
আজ ঘটল নতুন বর্ষের আগমন,
নতুন রূপে যেন সেজেছে ধরণী
হাসি খুশিতে ভরে গেল মন।
জীবনের সব দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা
চিরতরে মন থেকে মুছে ফেললাম,
নববর্ষের সাথে আসা আনন্দ গুলকে
আবার হৃদয়ের মাঝে আঁকড়ে ধরলাম।
বাংলার ঘরে-ঘরে পালিত হচ্ছে
নতুন বছরের আগমনে মহা উৎসব,
ফুলের মালায় বাড়ি দোকান সেজেছে
শুনি গান বাজনার আসরের কলরব।
তৈরি হয়েছে নানারকম সুস্বাদু খাবার
বাঙালির সেরা সন্দেশ নাড়ু মিষ্টি,
বিভিন্ন রকম খাবারে মন ভরে ওঠে
চেয়ে দেখি যত দূর যাই দৃষ্টি।
আজ নবরূপে সকলে মেতে উঠেছে
পরিধান করেছে নিত্য নতুন পোশাক,
মিলন মেলায় একত্রিত হচ্ছে মানুষ
বুঝলাম এসেছে নবরূপে বৈশাখ।
সারাদিন শীতল সমীর ছুয়ে গেল
আমার উচ্ছ্বাসিত মুক্ত কোমল হৃদয়,
বৈশাখের আগমনে প্রকৃতি নিয়ে এলো
এক ভয়ংকর বিধ্বংসী মহা প্রলয়।
বিকেলে পরিবর্তন হল দিনের প্রতিচ্ছবি
কাল জলদে অন্তরীক্ষ ঢেকে গেল,
শুনতে পেলাম অনিলের সোঁ-সোঁ শব্দ
চক্রের মত প্রলয়কারি পবন পাক খেল।
ভয়ে হৃদয়ে কম্পন অনুভূতি হল
অবশেষে উঠলো কাল বৈশাখীর ঝড়!
বজ্রপাতের আওয়াজে কাঁপলো ধরিত্রীর মাটি
প্রলয়ের কবলে পড়ে বিপদমুখি ঘরবাড়!
বৃষ্টির জোরালো ধাক্কা লাগছে জানালায়
ঝোড়ো পবনের প্রকপে গাছপালা দোলে,
নিমেষে ধ্বংস লিলা চালিয়ে গেল
কত ঘর ভেঙে পড়ল বসুধার কোলে!
সবুজ মাঠের প্রান্তে লক্ষ্য করে দেখি
নষ্ট হয়ে গেল কত জমির ফসল!
প্রকৃতির আঘাতে দুঃখ পেল চাষী ভাই
উপার্জন হল না তাদের আসল অর্থ!
ধূলোতে আচ্ছন্ন হয়ে থাকা অরণ্য
বৃষ্টির নীরে ভিজে করছে স্নান,
নতুন করে ধারণ করছে সবুজ বর্ণ
গন্ধবহে ছড়াচ্ছে কুঞ্জ ফুলের ঘ্রাণ।
ক্ষেতের ভেজা ঘাস দেখে মনে হয়
যতদিন ভুবন নিয়ম ধারায় চলবে,
প্রতিদিন উদিত হবে নতুন সূর্য
প্রতি বছর এভাবে মহা প্রলয় ঘটবে।


রচনাকালঃ- ১৫/০২/২০১৭