এই বিষন্ন পৃথিবীতে বাঁচব কিসের আশায়
জীবনের সবকিছু কেড়ে নিলো অত্যাচারী দানব!
কাকে শোনাব আমার এত দুঃখের কথা
কাকে হৃদয় চিরে দেখাব প্রাণের ব্যাথা!


দয়া-মায়া হীন এই বেরঙিন ধরণীতে
আসলে কোথাও নেই সততার ছিটে-ফোঁটা!
ক্ষুধার্ত পেটে মাথায় চিন্তার বোঝা নিয়ে
একা হেঁটে চলেছি অজানা দিশাহীন পথে।


ভিঁটেমাটি বলতে ছিল এক বিঘা জমি
সকাল হলেই দুয়ারের সামনে বসে শুনতাম,
একঝাঁক পাখিদের কিচিমিচি সুমধুর কণ্ঠে গান
আর সবুজ বৃক্ষে মোড়া আমাদের ছোট্ট গ্রাম।


দেখতাম আউস ধান ক্ষেতের সোনালী শস্য
শুনতাম বসন্তের ককিলের মধুর শব্দে গান,
বর্ষার দিনে দেখতাম অরণ্যে ময়ুরের নাচ
সেসব দৃশ্য দেখে ভরে যেত মোর প্রাণ।


কি করে ভুলে যাব এখানে কাটানো সমস্ত স্মৃতি
কি করে ছেড়ে যাব আমার এই সুন্দর গ্রাম!
কি করে হারাব পিতা-মাতার শেষ উপহার
এটাই তো আমার মায়া-মমতা মাখা জন্মভূমি।


মাটির ছোট্ট কুটীরে সাজিয়ে ছিলাম কত স্বপ্ন
যত দিন বাঁচব থাকবে সবকিছু গোছানো,
একবিঘা জমিতে উঠত কতনা সোনার ফসল
এত সুখ যেন আমার কপালে আর সইল না।


আমাদের গ্রামে ছিল এক অত্যাচারী জমিদার
সে আসলে অহঙ্কারী আর অনেক প্রাচুর্যের দাবিদার,
অসহায় মানুষের জমি বাড়ি দখল নিয়ে
আত্মসাৎ করা'ই ছিল তার প্রধান কাজ।


ভিতু প্রজাগণ তার মাথায় পরাত স্বর্ণের তাজ
জমিদারের নজর পড়ল আমার কুটিরের ওপর,
দখল নেবার জন্যে পিশাচ করলো ডিগ্রি-জারি
চারজন লেঠেল নিয়ে আসলো আমার বাড়ি।


রচনাকালঃ- ০৫/১২/২০১৬