শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা প্রসঙ্গে:
অষ্টম মাস পূর্ণ হলে কৃষ্ণাষ্টমী তিথি, ভাদ্রমাস, বুধবার হর্ষণযোগ রোহিনী নক্ষত্র মধ্য রাত্রি কাল উপস্থিত হল, একই সময়ে সর্বানন্দময় সচ্চিদানন্দ ভগবান দেবকীদেবীর গর্ভ হতে শ্রীকৃষ্ণের প্রাভব বিলাস চর্তুভুজ রূপে মা দেবকী ও বসুদেবের সম্মুখে আবির্ভূত হলেন। ঠিক একই সময়ে গোকুলে শ্রীযশোদার গর্ভ সিন্ধু হতে স্বয়ং রূপ ভগবান দ্বিভুজ নরশিশুর ন্যায় জন্মগ্রহণ করলেন এবং কয়েক ক্ষণের মধ্যে কন্যা যোগমায়া ও মহামায়ার সহিত জন্ম গ্রহণ করলেন। কিন্তু যশোদা মা কেবল অনুভব করলেন সন্তান হয়েছে, তা পুত্র না কন্যা কিছুই বুঝতে পারলেন না।
(শ্রীমদ্ভাগবতম্ ১০/২/৯ এবং ১০/৫/২ তাৎপর্য)


বসুদেব কৃষ্ণকে কোলে নেওয়া মাত্রই সকল বন্ধন খুলে গেল। প্রহরীরা গভীর নিদ্রায় নিদ্রিত হলো। যমুনা পার হয়ে বসুদেব নন্দগৃহে এসে নন্দরাণীর কন্যাটিকে গ্রহণ করে স্বপুত্রকে যশোদার কাছে রেখে পুনর্বার সেই পথে মথুরায় ফিরে এলেন। এখন কেউ প্রশ্ন করতে পারেন,বসুদেব কি স্বয়ং কৃষ্ণকে দেখতে পাননি। তার উত্তরে বলা হয়েছে, যোগমায়া নিজ কান্তির দ্বারা আচ্ছাদিত করে রেখেছিলেন এবং মেঘের মধ্যে যেমন সৌদামিনী বিলীন হয় তদ্রুপ বসুদেবের পুত্র নন্দপুত্রে বিলীন হলেন।


শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীতে সকল কবিগণকে জানাই কৃষ্ণপ্রীতি ও শুভেচ্ছা। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!



শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা দ্বিতীয় পর্ব
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


শুভ জন্মাষ্টমী তিথি পূণ্য শুভক্ষণ,
কারাগারে জন্মিলেন দেবকী নন্দন।
যমুনার ওপারেতে নন্দের ভবন,
পুত্র লয়ে বসুদেব করিল গমন।


অশনি ঝলিছে মেঘে ঝরিছে বাদল,
উথাল পাথাল করে যমুনার জল।
পুত্র কোলে বসুদেব যমুনা কিনারে,
ভাবিছেন কি প্রকারে যাইব ওপারে।


শৃগালে দেখায় পথ অন্ধকার রাতে,
বসুদেব চলিলেন তার সাথে সাথে।
বাসুকি বিস্তারি ফণা ছত্র ধরে শিরে,
কৃষ্ণকোলে বসুদেব চলে ধীরে ধীরে।


জন্মাষ্টমী ব্রতকথা হ'ল সমাপন।
জয় কৃষ্ণচন্দ্র বলি ডাক সর্বজন।।
কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ব্রত করে যেইজন,
সকল সদিচ্ছা তার হইবে পূরণ।।


রোগ শোক দূরে যায় শান্তি পায় মনে।
জন্মাষ্টমী ব্রতকথা যেই জন শুনে।।
আমি অতি দীন হীন প্রার্থনা চরণে।
লক্ষ্মণে করহ কৃপা আপনার গুণে।।


করুণার সিন্ধু তুমি অগতির গতি,
তব শ্রীচরণে যেন থাকে মম মতি।
জন্মাষ্টমী ব্রতকথা হৈল সমাপন,
পাঁচালির ছন্দে কবি লিখিল লক্ষ্মণ।