ফুল হয়ে ফুটেছিলাম।
গন্ধ ছড়াতে চেয়েছিলাম।
স্বামী দেবতার চরণকমলে-
নিজেকে অর্পণ করতে চেয়েছিলাম।
আর চেয়েছিলাম স্বামীপুত্র নিয়ে
একটা সুখের সংসার। যেখানে
থাকবে চির শান্তি বিরাজমান।
কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য, আমি যা চেয়েছিলাম
তার কোনটাই আমি পেলাম না।
আজ আমার একমাত্র পরিচয়
আমি একটা বাসি ফুল।
ঝরে না পড়লেও সেই সতেজতা
আমার আজ নেই।
পাপড়িগুলো আজ আমার ক্ষতবিক্ষত।
মধুকরের মধুপান করার আগে
আমি ছিলাম মধুর, সুন্দর, মনোরম।
রক্তিম সিঁথির বিবর্ণ সিঁদুর
আমাকে আজও বিদ্রূপ করে।
ক্ষমাহীন ভয়ংকর এক কালো রাত!
আমার জীবনের এক বিভীষিকাময় রাত।
আমার বিয়ে হল, কিন্তু বাসর হলো না।
মিলন-বাসর রাতে কে বা কারা
আমার স্বামীকে খুন করলো।
আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে
আমার সতীত্ব নষ্ট করলো ।
পবিত্র দেহটা আমার অপবিত্র হয়ে গেল।
রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে গেল
আমার সব স্বপ্ন, সব আশা।
আমার সুখের সংসার অশান্তির দাবানলে
জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেল নিমেষে।
আজ আমার একমাত্র পরিচয়
আমি এক বাসর ভাঙা বধূ,
দেহ বিলাসিনী, লাস্যময়ী,
বেশ্যালয়ের নিশিকন্যা।
নীলাভ একটা আলো আমার
এখানে মিটিমিটি করে জ্বলে।
সবুজ পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে
কেটে যায় রাতের পর রাত।
রক্তিম সিঁথির বিবর্ণ সিঁদুর আজও
রাতের অন্ধকারে শুধু কাঁদে।
নতুন সকালের অপেক্ষায় আছি।