ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস
যদি কোনদিন লেখা হয়, হয়তো
তাতে থাকবে না তরুণ কিশোর বাবলুর নাম।
কিন্তু দেশের স্বাধীনতার জন্য সে যা করেছে,
তার জন্য শুধু ভারতবাসীই নয়
সারা বিশ্ববাসী তাকে মনে রাখবে।
বাবলু, একটি নাম।
তেরো বছরের একটি বালক।
স্বাধীনতা কামী এই ছোট্ট কিশোর
একদিন মাষ্টারদার কাছে একটা
পিস্তল চেয়েছিল। মাষ্টারদা জিজ্ঞেস করেছিলো
তাকে কি করবে তুমি পিস্তল নিয়ে?
-সাহেব রিচার্ডসনকে গুলি করে মারবো।
মাষ্টারদা তাকে পিস্তল দিয়েছিল,
তবে আসল নয়, নকল।
সেই টয় পিস্তল হাতে নিয়ে
সে রিচার্ডসনকে বলেছিল- আমাদের দেশ
ছেড়ে তোমরা চলে যাও সাহেব, নইলে
আমি তোমাকে কুকুরের মতো
গুলি করে মারবো। হায়রে অবোধ শিশুর মন!
পিস্তলের ভেতরে যে গুলি নেই
তা কি জানতো সেই তেরো বছরের বালকটা?
পুলিশ কনেষ্টবল এসে তাকে ধরে নিয়ে
থানায় চালান দিল। তার উপর নির্যাতন
চালাল ব্রিটিশ পদলেহী ভারতীয় কনেস্টবলরা।
ছোট্ট কিশোরটাকে মাটিতে শুইয়ে,
তার বুকের উপর পা তুলে তার নখের ডগায়
আলপিন ঢুকিয়ে দিল। বালক অসহ্য ব্যথায়
‘বন্দে মাতরম’ ধ্বনিতে গোটা থানার
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বলেছিল-
স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা কি অন্যায়?
দেশ যদি স্বাধীন হয় তাহলে চল্লিশ
কোটি ভারতবাসী মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলবে।
এরপর ইলেকট্রিক শক লাগিয়ে তার প্রাণহীন
দেহটাকে চিরদিনের মত অবশ করে দেওয়া হলো।
... ... ...


তারপর বহু রক্ত গঙ্গা বয়ে গেছে
এদেশের উপর দিয়ে। দেশ হয়েছে স্বাধীন।
বাবলু- একটা নাম। একটা আতঙ্ক!
বাবলু- পিস্তলের একটা বুলেট।
বাবলু- একটা খাপখোলা তলোয়ার।
স্বাধীন ভারতে বাবলু হারিয়ে গেছে
ইতিহাসের ছেঁড়া পাতা হয়ে।