শুভ বিজয়া দশমী ............... দেবী বিসর্জন
আবার আসিও মা পুনর্বার (তৃতীয় পর্ব)
তথ্য সংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


দুর্গাপুজো শেষ। বিজয়াদশমীর দিনটি বাঙালির কাছে অত্যন্ত দুঃখের দিন। এ বছরের মতো শেষ দুর্গাপুজো। আবার এক বছরের প্রতিক্ষা। আবার নতুন করে মূর্তি গড়া, আবার প্যান্ডেল বানানো, আলোর কাজ। সব কিছু আগামী বছর আবার নতুন করে।


কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন, দুর্গা প্রতিমা ভাসান দেওয়ার কারণ কী? এমন তো করাই যেত, প্রতিমা এক বার বানানো হত, তার পরে সেই প্রতিমাই বছরের পর বছর পুজো হত। বাড়িতেও অনেকে মাটির মূর্তি পুজো করেন। তাঁরাও তো ভাসান দেন না। তাঁরাও তো বছরের পর বছর একই মূর্তি পুজো করেন। এক্ষেত্রে তেমন হয় না কেন?


শাস্ত্র বলছে, এর পিছনে রয়েছে এক নিয়ম। পুজোর সঙ্গে বিজয়া দশমী অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। এবং সেদিন মাতৃ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়াই কাজ। এর পিছনে থেকে থাকা কারণটি লুকিয়ে রয়েছে পৌরাণিক কাহিনিতেই।


পুরাণ মতে, এই সময়ে দেবী নিজের বাপের বাড়িতে আসেন। এবং তার পরে দশমীর দিন তিনি আবার স্বামীর কাছে ফিরে যান। দেবী যখ বাপের বাড়ি আসেন, তখনই তাঁর পুজো করা হয়। মর্ত্যলোকে দেবীর আরাধনার জন্য মূর্তি গড়া হয়। এর পরে মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেবী তাতে অধিষ্ট হন। কিন্তু দশমীর দিন এই মাটির দেহ ত্যাগ করেই তিনি ফিরে যান স্বামীর কাছে। তখন মাটির দেহটি প্রাণহীন হয়ে পড়ে।


ঠিক যেভাবে সনাতনি হিন্দু ধর্মে প্রাণহীন দেহকে পঞ্চভূতে বিলিন করার কথা বলা হয়েছে, এক্ষেত্রেও মাটির প্রতিমাকে নিয়ে সেভাবেই পঞ্চভূতে বিলিন করা হয়। মনে করা হয়, মানুষের দেহ যেমন পঞ্চতত্ত্বে গড়া— আকাশ, বায়ু, অগ্নি, জল ও মাটি— দেবী প্রতিমাও তেমনই। তাই এই পঞ্চতত্ত্বের একটি, অর্থাৎ জলে সেই প্রতিমাকে বিসর্জন দেওযা হয়। এভাবেই বিসর্জনের ব্যাখ্যা দেয় শাস্ত্র।


বাংলা কবিতা আসরের সকল কবি ও সহৃদয় পাঠকগণকে জানাই আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!!!


বিসর্জনের বাজনা বাজে ...... দেবী বিসর্জন
একটি বছরের প্রতীক্ষা আবার (তৃতীয় পর্ব)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


দেবী বিসর্জন হয় দশমী দিবসে,
বসুধা হতে দেবীর গমন কৈলাসে।
বাঙালীর দুর্গাপূজা খুশির বাহার,
হাসি খুশি কলরবে দিন হয় পার।


ষষ্ঠীতে বোধন হয় দেবী আগমন,
মহাষষ্ঠী বিধিমতে পত্রিকা বন্ধন।
সপ্তমী অষ্টমী পূজা মহা ধূম ধাম,
ভক্তিভরে দেবীমার অঞ্জলি প্রদান।


দশমী বিহিত পূজা হয় বিধিমতে,
দেবী বিসর্জন হয় অজয় নদীতে।
বিসর্জনে বাদ্য বাজে হয় জয়ধ্বনি,
বর্ষেবর্ষে ধরাধামে এসো মা জননী।


অজয় নদীতে হয় দেবী বিসর্জন,
সারা বর্ষ প্রতীক্ষায় রহে সর্বজন।
পুনর্বার এস মাগো এই বসুধায়,
লিখিল লক্ষ্মণকবি তার কবিতায়।