রবীন্দ্রনাথের কবিতা "সাধারণ মেয়ে" গদ্য পদ্যের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ! আমার মতে এটি একটি শ্রেষ্ঠ গদ্য কবিতা! তাই তাঁর "নিমন্ত্রণ" কবিতায় তিনি লিখলেন
"গদ্যজাতীয় ভোজ্য কিছু দিও
পদ্যে তাদের মিল খুঁজে পাওয়া ভার"
কবিগুরুর নিজের কথায় বলি যে গদ্য কবিতায় যেভাবে নিজের মনের ভাবনাকে তুলে ধরা যায় মিল এর কবিতায় সবসময় তা সম্ভব হয়না! সাধারণ কথা বা সাধারণ ভাব কেমন করে অসাধারণ ধ্বনিরূপ পেতে পারে রবীন্দ্রনাথের "সাধারণ মেয়ে" তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ !না হলে এই কবিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি সাধারণ মেয়ে  "মালতী" কে  দিয়ে শরৎচন্দ্র কে অনুরোধ করালেন তাকে যেন তিনি কলমের খোঁচায় অন্তত তাকে অসাধারণ মেয়ে করে দেয়! মালতী কথা দিলো একথা সে কাওকে বলবে না ! কারণ ঘরে ঘরে এরকম রয়েছে হাজার হাজার মালতী! কেও জানবেনা এ কোন মালতী! অল্প বয়েসে নরেশ তার মন ছুঁয়েছিল তার কচি মনে!একথা সে বিশ্বাস করতেও পারেনি আবার না করার জোর ও সে পায়নি! নরেশ চলে গেলো বিলেত! একটি চিঠিতে সে লিখলো সে নাকি তার মেয়ে বন্ধু "লিজি" র সঙ্গে সমুদ্র তীরে বসে আছে! লিজি তাকে বললো
"এই সেদিন তুমি এসেছো
দুদিন পরে যাবে চলে
ঝিনুকের দুটি খোলা
মাঝখান টুকু ভরা থাক
একটি নিরেট অশ্রুবিন্দু দিয়ে"


শরৎবাবুকে তাই অনুরোধ করে সে যেন গল্পে নরেশ কে বারবার ফেল করিয়ে দেয় পরীক্ষাতে আর মালতী কে যেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম,এ  তে গণিতে প্রথম স্থান পাইয়ে দেয়! বিলেতে গিয়ে সে দেখিয়ে দেবে সেও অসাধারণ মেয়ে!


পরিশেষে বলি মালতির মতো সাধারণ মেয়েরা জানে শুধু একটি ভাষা! সে ভাষা কান্নার ভাষা! অল্প বয়েসের কিছু গোপন ইচ্ছে বিকিয়ে যায় মরীচিকার দামে! আজ ও আমরা তাকিয়ে থাকি শরৎচন্দ্র ও কবিগুরুর দিকে কিভাবে তাঁরা  সাধারণ শব্দ ও ভাষার বেড়া ভেঙে  অসাধারণ করতে পেরেছিলেন !


আজকের মতো আমার নটেগাছ টি এখানেই মুড়োলো!