ভেবেছিলাম একটা উপন্যাস লিখবো,
একটা নিষ্কলুষ ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
সাদা পাতার উপর কলমের আঁচড় কেটে
একটা স্বচ্ছ প্রেমের ইতিহাস তুলে ধরবো,
যার প্রতিটি পাতায় পাতায় প্রতিটি বাক্যে-শব্দে
বয়ে যাবে ভালোবাসার বহতা নদী।


প্রতিটা পাতায় পাতায় বর্ণনা থাকবে
ভালোবাসার ব্যক্ত-অব্যক্ত প্রতিটা মুহূর্ত।
আমি লিখলাম বেশ কয়েকটা পৃষ্ঠা জুড়ে
শুধুই লিখলাম, বেশ ভালোই চলছিলো।
মাঝপথে অবাধ্য শব্দরা কেন জানি
হারিয়ে যেতে লাগলো দৃষ্টির অন্তরালে।


দু'হাত ভরে এত হাতরালাম,
তবুও ধরা দিলো না কিছুতেই।  
মাঝখানে কয়েকটা সাদা পাতা রেখেই
অবাধ্য শব্দ গুলোকে অনেক কষ্টে পোষ মানিয়ে
আমি আবারো সব গুছিয়ে শুরু করলাম।
চালিয়ে গেলাম একটা সুন্দর পরিণতি দেবো বলে,
একটা শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের স্বাদ গ্রহণ করবো বলে।


কিন্তু একি! হঠাৎ একটা ধূলো ঝড়ে বয়ে আসা
ক্ষুদ্র ধূলিকণা চোখে পড়তেই কয়েক ফোঁটা
নোনা জল গড়িয়ে কয়েকটা পাতা ভিজিয়ে দিলো। কিছু শব্দ মুছে বাক্যগুলো এলোমেলো করে,
উপন্যাসের পটভুমি আবারো ঝাপসা করে দিলো।


তারপরও আমি হাল ছাড়িনি
একটা ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস লিখবো বলে।
উপন্যাসটার একটা সুন্দর পরিণতি দেবো বলে
আমি আবারও শব্দ-বর্ণের খেলায় মেতে উঠলাম।
কিন্তু নিয়তি ! গল্প শেষ হতে না হতেই
উপন্যাসের শেষের পাতা গুলো খালি রেখে
শব্দ-বর্ণ গুলোকে নিষ্ঠুরভাবে বাক্সে বন্দী করে,
আবেগ অনুভূতি গুলোকে কঠোর হস্তে দমন করে
এক কোণায় অনাদরে ফেলে রাখতে বাধ্য হলাম।


কালের আবর্তনে উপন্যাসের সাদা পাতা ধূসর হলো
এক অভিশপ্ত অগ্নিশিখা সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে
পুরো উপন্যাসটির অস্তিত্বই বিলীন করে দিলো। সমাপ্তের আগেই উপন্যাসটি অভিশপ্ত হয়ে গেলো।
একটা ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস লেখার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল, আর আমার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস
স্বপ্ন হয়েই রইলো।