আমি নোনা জলে ডুব সাতার আয়ত্ত করে নিয়েছি,
এখন  কোন জলের স্পর্শ
আমাকে আর তৃপ্ত করেনা।
দুঃখের বীণার তান এখন আমায় বড় টানে ;
তাল, লয় ছন্দ দিন দিন যেন  সবই নীরস।
কারো সহানুভূতি এখন বড়ই অযাচিত মনে হয়।
কারো ভালোবেসে কাছে আসা
কারো মিষ্টি কথা, এখন সবই ভনীতা লাগে।


কষ্টের রং গাঢ় হতে হতে  নিঃশ্বাসও
এখন তিক্ত মনে হয়।
মস্তিষ্কের কোষে কোষে চলে অভিমানের মহাপ্রলয়
প্রতিটি লোমকূপের গোড়ায় জমা হারানোর ব্যাথা; প্রতিটি ইন্দ্রিয়ে আলোড়ন তুলে না-পাওয়ার সুর, শিরা-উপশিরায় বহে যায়, না পাওয়ার যন্ত্রণা।
তাইতো অন্ধকার এখন আমার ভীষণ পছন্দ
নীরবতা এখন আমার নিত্য সঙ্গী।


প্রহর আমার নিদারুণ অভিমানে খুনসুটি খেলে;
আচঁড় কাটে অনুভূতির গোড়ায়,
আনন্দের ছিটেফোঁটা না পেয়ে ফিরে যায় রিক্ত হস্তে।
শুধু  প্রতিক্ষণে মনে হয় খসে পড়া উল্কাপাতের মতো একদিন  হঠাৎ করেই মাটিতে মিশে,
এক অশুভ লগ্নে বিনা বাক্যব্যয়ে  
লোকচক্ষুর আড়ালে হাড়িয়ে যাবো।


হয়তো বর্ষপঞ্জিকার একটা বিশেষ তারিখ হয়ে
কারো হৃদয়ে দাগ কেটে থাকা আর হবেনা,
হয়তো  কারো মনে শক্ত  জায়গা করে  
স্মৃতি হয়ে বেঁচে থাকা হবেনা।
ঘটা করে আমার জন্ম মৃত্যু বা বিবাহ বার্ষিকী
কেউ পালনও করবেনা  
হয়তো কালের পরিক্রমায় বেমালুম সবাই ভুলে যাবে,
কৃষ্ণগহ্বরের মতোই সব গিলে খাবে
বেপরোয়া এই সময়।


এসবেও এখন আর মন খারাপ হয়না,
কারণ  আমি রপ্ত করতে শিখে গেছি কিভাবে
লাল কষ্ট নীল কষ্ট শুষে নিয়ে
মান অভিমান লোকলজ্জা ভুলে,
জীবনের সব আল্লাদ জলাঞ্জলি দিয়ে
বেদুইন এর মতো বেঁচে থাকা যায়।
কীভাবে কষ্টকে  পিষ্ট করে,
অভিমানের দাফন রচনা করে শিলাস্তরে পরিণত হয়ে অনুভূতিহীন কঠিন শিলা হয়ে বেঁচে থাকা যায়।