গোধূলির বুক ছিড়ে যখন সন্ধ্যা নামে
তুলশী তলায় বাজে উলুধ্বনির সুর;
সবার তখন নীড়ে ফেরার পালা,
অস্তমিত সূর্য্য আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায় দূর অজানায়
আমি ঠিক তখন অধীর আগ্রহে
পথ চেয়ে থাকি তোমার অপেক্ষায়।  


সামনে দিয়ে কৃষান যায়, কৃষাণী যায়
রাখাল বালক গরু নিয়ে ফিরে নিজ বাড়ি।
কপোত-কপোতীও সন্ধ্যা নামার আগে ফিরে নিজ নীড়ে,
পাশের উঠোনে কঁচি-কাঁচাদের লুকোচুরি খেলার আওয়াজ।
মায়ে-ঝিয়েরা ব্যস্ত তখন সন্ধ্যা আরতি নিয়ে।

আমি বিমর্ষ নয়নে পথ চেয়ে থাকি সেই বকুল গাছের তলায়!
খুঁজে ফিরি তোমায় আনমনে,
এথায় হেথায় কত স্মৃতি মাখা গল্প রয়েছে জড়ায়ে।
কত স্মৃতি হাতরিয়ে ছুঁয়েছি তোমায় বহুবার
কতবার চেয়েছি ফিরে এসো, ধরা দাও বাস্তবে।
পথ ভুলে কেন তুমি অনন্তের যাত্রায় পাড়ি দিলে!
আমাকে একা ফেলে তুমি হলে অকাল নিরুদ্দেশ।


একসাথে দীর্ঘ পথ ছিলাম পাশে পাশে
তবে কেন তোমার এতো তাড়া ছিলো,
ওই অজানার উদ্দেশ্যে।  
আমায় সাজিয়ে ছিলে শাঁখা পলায়
রাঙ্গিয়ে ছিলে সিঁথী রাঙা সিঁদুরে,
তবে অকালেই কেন সব রং মুছে দিয়ে
হয়ে গেলে  তুমি স্মৃতি।


জানিনা কেন সবাই  এখন আর আগের মতো
মন থেকে আর বাসেনা ভালো।  
সবার কাছে হয়ে গেছি বোঝা
হয়ে গেছি দিন দিন আরো অপ্রিয়।
জানো, এখন সবাই তোমার পরীর নাম দিয়েছে অপয়া।
রাক্ষসী,  অপয়া পরী অকালে নাকি খেয়েছি তোমায় গিলে।
তাইতো সব রং শাঁখা পলা নিয়েছে সবাই খুলে।


কু-মতলবীর ক্রমাগত বাঁকা চোখ
গিলে খেয়েছে আমায়, কুচক্রীর দল করেছে ষড়যন্ত্র।
পরাস্ত হয়ে ওরা আমায় কলঙ্ক  দিয়েছে লেপে
সমাজপতির রক্ত চক্ষু ও পাড়া পড়শীর লোলুপ দৃষ্টি প্রতিনিয়তই চোখ দিয়ে করে চলেছে ধর্ষন।
তুমি দেখো তোমার পরী, তুমি ছাড়া কত অসহায়
দিন গুনছে অজানায় পাড়ি দিবে বলে।
  
কি অপরাধে তুমি এমন সাজা দিলে
কি অপরাধে তোমার কলিজার পরী মৃত্যুর প্রহর গুনে।
তোমার পরী ডুকরে  কাঁদে,
জানিনা এর শেষ  হবে কোথায়,
কত প্রহর কাটবে আমাদের মহামিলনের প্রতীক্ষায়।তোমার পরী আজও সেই প্রতীক্ষায়
অস্তমিত সূর্যের ডুব দিয়ে সন্ধ্যা ঘনার রূপ দেখে।