কৈশোর শেষে ঠিক যৌবনের প্রারম্ভে,
যে মোহ ও ভালোবাসার টানে
শক্ত করে ধরেছিলাম দুজন দুজনার ভরসার হাত।
মাঝখানে কত সময় খরস্রোতা নদীর মতো
বয়ে চলে গেলো
তবে কিঞ্চিত কম পড়েনি সেই ভরসায়।
বহু জোয়ার-ভাটা,আমাবস্যা-পূর্নিমা চলে গেলো
কত হাসি কান্না কত বেদনা স্মৃতি হয়ে রইলো।
একের পর এক এক করে, কয়েক যুগ কেটে গেলো
এ মায়ার বাধন দৃঢ় হতে আরো দৃঢ়তর হলো,
গভীর হতে গভীরতর হলো ভালোবাসা।

কালের পরিক্রমায় এখন আর
কোন কিছুই আগের মতো নেই,
সময়ের আবর্তনে, জীবনের প্রয়োজনে
বদলে গেছে অনেক কিছুই।
বদলে গেছে রুপ-যৌবন,
পড়েছে চোখের নীচে কালি
কুচকে গেছে গায়ের চামড়া
পড়েছে বয়সের ছাপ।
নরম নমনীয় কোমল শরীর হয়েছে খসখসে।
কাম, বাসনা, চাওয়া-পাওয়া পৌঁছে গেছে শুন্যে।
ক্রমান্বয়ে কালো কেশ হয়েছে সাদা
বিলীন হয়ে গেছে গোছা চুল।


বয়সের ভারে শরীর রয়েছে নুয়ে,
তবুও পরম মমতায় একে অন্যের প্রতি
মায়া; যত্ন দায়িত্ব বিন্দু মাত্র যায়নি কমে।
নিত্য সঙ্গী হয়েছে নানা ঔষধ
তারুন্য পেরিয়ে পেয়েছে বার্ধক্যের রূপ।
যৌবন ক্ষয়ে ক্ষয়ে হয়েছে অসার।
আর জীবন প্রদীপ সদা করছে নিভু নিভু
তারপরেও প্রতিনিয়ত সাহস পাই
একে অন্যের ভরসার হাত টুকু ধরে।
হঠাৎ কোন একদিন হয়তো প্রান বায়ু বেরিয়ে যাবে।
কোন এক কাক ডাকা ভোরে হয়তো
তোমাদের কাছে খবরও পৌঁছে যাবে
ওমুকের বাবা কিংবা ওমুকের মায়ের জীবন সফরের হয়েছে অবসান।
প্রয়াত হয়েছেন উনি।


নিভে গেছে জীবন প্রদীপ,
বিচ্ছেদ হয়েছে একত্রে থাকা
একই সুতোয় বাঁধা দুই আত্মার।
একজন এখন মৃত আর অন্য জন জীবন্ত লাশ।
হয়ে যাবে ভালোবাসার ছন্দ পতন।
প্রতিনিয়ত অশ্রু হয়ে গড়াবে হৃদয়ের আর্তনাদ।
আপসোস নেই কোন কিছুর।
নির্ধিধায় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার সাহস আছে,
সাহস নেই শুধু দুজনের মধ্যে
বিচ্ছেদকে বরণ করার।
কারণ আমরা একে অপরের বেঁচে থাকার আলো।
একজন ছাড়া আরেক জনের জীবন
শ্বাসরুদ্ধকর কবরের মতো ঘুটঘুটে কালো।