মনে পড়ে?
একদিন তোমার ঠোঁটের ঠিক বাম পাশে যে তিলটা আছে সেটা ধরে দেখার বায়না করেছিলাম,
অমনি তুমি ক্ষেপে গিয়ে বললে কী হচ্ছে এসব অসভ্যতা!
এতই যদি শখ তিল ধরবার বিয়ে করে নিলেই পারো...
সেদিন আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব ছিল না,
তুমি জানতে, তবুও বলতে বিয়ের কথা!


আর ঐ যে সেদিন, যেদিন তোমার চুল এসে বার বার আমার মুখের ওপর খুনসুটি করছিল,
আমি মনের অজান্তেই সেই চুল নিয়ে খেলা করছিলাম...
তুমি ঝট করে দাঁড়িয়ে বললে,
এসব আমার মোটেও ভালো লাগে না,
যদি এত্ত চুল নিয়ে খেলা করবার শখ তো  বিয়ে করে নিলেই পারো...
সেদিন আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব ছিল না,
তুমি জানতে, তবুও বলতে বিয়ের কথা!


একদিন ভার্সিটি যাওয়ার পথে রিক্সায় তোমার হাত ধরেছিলাম,
তবে  নিজের ইচ্ছেই নয়,
ভাঙ্গা রাস্তায় রিক্সার ঝাঁকুনিতে তুমি যাতে ব্যথা না পাও তাই কিছুটা আগলে রাখার বাসনায়...
যেই রিক্সাটা পিচঢালা মসৃণ সড়কে এসে পৌঁছাল অমনি আমার হাতের বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে বললে, এইসব নোংরামো না করলেই কি নয়?
আর যদি খুব নোংরামো করতেই হয় তবে বিয়ে করে নিলেই পারো...
সেদিন আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব ছিল না,
তুমি জানতে, তবুও বলতে বিয়ের কথা!


মনে পড়ে তোমার?
পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভা যাত্রায় পড়েছিলে লাল পাড়ের সাদা শাড়ি, মাথায় বাহারি ফুলের শোভা সাথে লাল টিপ...
সব কিছু ঠিক ছিল কিন্তু হয়তো তোমার মনের অজান্তে বক্ষবন্ধনীর ফিতেটা কিছুটা বাইরে উঁকি দিচ্ছিল,
আমি চাইনি সেটা তোমার অস্বস্তির কারণ হোক,
তাই তো হাজার লোকের ভিড়ে তোমাকে আড়াল করে যেই বললাম ঠিক করে নিতে,
তুমি বললে আমার দৃষ্টি খারাপ, লম্পটের দৃষ্টি... আরো কতো কী!
আরো বললে যদি এতই দেখার ইচ্ছে তবে বিয়ে করে নিলেই পারো...
সেদিন আমার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব ছিল না,
তুমি জানতে, তবুও বলতে বিয়ের কথা!


এরকম আরো কতো অযুত ঘটনা আছে তা বলে শেষ করা যাবে না;
কিন্তু তুমি কখনোই বুঝতে চাওনি আমার পক্ষে তখন বিয়ে করা সম্ভব ছিল না। আমি জানতাম তুমি আমাকে ভালোবাসো, কিন্তু বিশ্বাস করতে না ষোল আনা;


আচ্ছা ষোল আনা বিশ্বাস ছাড়া কি ভালোবাসা যায়?


এরপর মাস গেল, বছর গেল, বছর ঘুরে যুগও গেল... তোমাকে বিয়ে করার সামর্থ্য বা সৌভাগ্য আমার হওয়ার আগেই অন্যের কেশর বুকে নিজের মাথা গুঁজে শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছিলে।


তোমার ঠোঁটের বাম পাশের তিলটা আমার ছৌঁয়া হলো না।
পূর্ণ হলো না তোমার চুল নিয়ে খেলা করা বা হাত ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকার বাসনাটুকুও...


এরপর আমায় হঠাৎ ফোন দিয়ে যেদিন বললে তুমি ভালো নেই, বিশ্বাস করো দু'চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু গঙ্গা বয়েছিল। আর এখন তো তুমি এমন যে তোমার শরীরের বিনিময়ে আমার কাছে ভালোবাসা ভিক্ষে চাও...


কিন্তু দেহ সর্বস্ব প্রেম যে ভালোবাসা নয়; প্রেমে স্বার্থ থাকে ভালোবাসায় নয় তোমায় বোঝাবো কীভাবে?


আমি যে আজো তোমাকে ভালোবাসি...