আমার আম্মার নাম হাজেরা খাতুন আলো। ১৯৫২ সালে বিক্রমপুরের নামকরা ব্যবসায়ী ঘরে তার জন্ম। তার বাবার নাম খবির-উদ্দিন হাওলাদার আর মায়ের নাম লতিফুলনেসা। ৩ ভাই আর ৫বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। আমার আম্মার বয়স যখন তিন মাস তখন আমার নানা মারা যায়। আমার নানাদের বিরাট পরিবার ছিল। তাদের ব্যবসা প্রধানত আসামে ছিল। কলকাতায় আমার নানার দুইটা বিরাট জমিদারসম বাড়ি ছিল । আম্মা বাবা হারা ছিল বলে সবার আদরের ছিল। পড়াশুনায় আর খেলাধুলায় ভাল ছিল। ১৯৬০ সালে মুন্সিগঞ্জ সাব-ডিভিশনে পঞ্চম শ্রেণীতে ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন। এরপর তিনি ঢাকায় তার বড় বোনের বাড়ি চলে আসেন। বাংলাদেশের প্রথম পাবলিক কমিশনের চেয়ারম্যান ডঃ বি করিম আম্মার বড় দুলাভাই।
গার্লস গাইড করেছেন। ইংল্যান্ডের রানীর সাথে হাত মিলিয়েছেন। ১৯৬৫ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯৭১ সালে বি এ পাস করেন। ১৯৭৬ সালে ১৩ জুন আমার আব্বা শিল্পী আবদুর রউফ সরকারের সাথে বিবাহ বন্ধে আবদ্ধ হন। আম্মার ও আব্বার বিয়ের কাহিনীটি নিয়ে কবি শামসুর রহমানের কলাম লিখেছিলেন। তারা শামসুর রহমানের স্নেহভাজন ছিলেন। আমরা সালাম আলি আহসান অতি আর ফারহানা শারমিন তিথি তাদের সন্তান।


আম্মা জীবনে অনেক কষ্ট করেছে আবার অনেক আনন্দ করেছে।আম্মার হাতের পরোটা ও পোলাউ অনেক মজা হয় । আম্মার হাতের ভাপা পিঠা আর বিভিন্ন পিঠা অনেক মজা হয় ।
আম্মা সব ধরনের সেলাই ফোরাই করেন।অনেককে সেলাই করে উপহার দিতে পছন্দ করেন। তিনি কলেজ লাইফ থেকেই লেখালেখির সাথে জড়িত ছিলেন।  তার ৩৪ টা কবিতা, দুটা গল্প ব্লগে এবং পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
গল্প ও উপন্যাস পড়তে পছন্দ করেন। তিনি সবার প্রিয় কারন ঠাট্টা মস্করা করতে পছন্দ করেন ও আমাদের বাসায় যেসব বিড়াল পালা হত তাদেরকে অনেক দেখাশুনা করেছেন।তাই বিড়ালগুলি আম্মার পিছন পিছন ঘুর ঘুর করত।


২০১১ সালে ২৪ এপ্রিলে আমার আব্বা ইন্তেকাল করে। তিনি ক্যান্সেরের রোগী ছিলেন। আমার আম্মা তাকে যে সেবা করেছে তার প্রতিদান একমাত্র আল্লাহু দিতে পারবেন। আমার আম্মা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা। ধন্যবাদ আমার আম্মা হওয়ার জন্য।