কবিকে জানাই সাদর অভ্যর্থনা:

দীর্ঘদিন পর কবিকে আসরে পেয়ে ভীষণ আহ্লাদিত হলাম। কামনা করব; অতপর কবি আমাদের ছেড়ে যাবেন না। সুখে-দুঃখে, ভালয়-মন্দে তিনি 'সৌখিন কবি'দের পাশে থেকে উৎসাহ যোগাবেন। পাশাপাশি কবির অপূর্ব সৃষ্টির অতুল বৈভবে আমাদের স্নান করাবেন। তাঁর লেখনীর শৈল্পিক আলোচনায় কাব্যিক দিক-নির্দেশনা দানে ‘সৌখিন কবি’দের পরিশীলিত করে তুলবেন। তাঁর পৃষ্টপোষকতায় পাতায় শৈল্পিক কাব্য-সমালোচনার চর্চা বাড়বে।


মনে পড়ে - ডিসেম্বর, ২০১৪-তে আভাস পেয়েছিলাম; কবি সহসাই পাতায় নিয়মিত হবেন। স্বভাবজাত নিয়মেই কোন পোস্ট না দিয়েও ক্ষণে ক্ষণে কবিতা-পাতায় হানা দিয়ে অপর কবির পাতায় উৎসাহব্যঞ্জক শৈল্পিক মন্তব্য দিয়ে আসরকে মাতিয়ে রাখার অনন্য নিপুণ কবি - ২৬/০৬/২০১৪-এর প্রায় এগার মাস পর কেবল গতকালই 'রূপান্তর' নিয়ে পাতায় এলেন। ইতোমধ্যে পাতায় গিয়ে কবি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে এলাম (কেননা; পাতায় কাছাকাছি নামে আর এক কবি আছেন)। দুঃখিত, পাতায় তেমন সময় দেই না; নিয়মিত থাকিও না বলেই পোস্টটি দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিল। মনের ঐকান্তিক কামনা - এখন থেকে ভাইটিকে নিয়মিত পাতায় পাব।

'কবিতার পাঠক কম' – কথাটা মিথ্যা প্রমাণিত হল:

‘রূপান্তর’ কবিতাটি পড়ার আগে কৌতুহলবশত গত ২৬/০৬/২০১৪ তারিখে প্রকাশিত কবির সর্বশেষ কবিতা - "কেউ খুঁজবেনা তোকে" http://www.bangla-kobita.com/bodrul/post20140626075242/ আবার পড়তে গেলাম। কবির পাঠকসংখ্যা দেখে অবাক বিস্ময়ে 'থ' ... আমার পাঠ অবধি কবিতাটির হিট সংখ্যা ছিল: ২২৪৪! অর্থাৎ অপর পাঠক কর্তৃক মাত্র(!) ২২৪৪ বার কবিতাটি পড়া হয়েছে! গর্বে বুকটা সত্যি অনেক ফুলে উঠল। কামনা করি; দয়াময় কবিকে অতুল ঐশ্বর্য দান করুন।

কোন খ্যাতিমান কবির লেখা ছাড়া এই আসরে এত অধিক সংখ্যক পাঠক (বিশেষতঃ কালের হিসাবে পাতায় কবির বয়েস ১ বছর ৬ মাস হলেও কবিতার সংখ্যা মাত্র ২১টি) আর কোন কবির আছে বলে আমার জানা নেই। আমরা পাতার 'সৌখিন কবি' (তাহলে কবি বোদরুল আলমের অবস্থান কী হতে পারে?) - শত শত পোস্ট দিয়েও সাকুল্যে ২১ কবিতার জনক - কবি বোদরুল আলমের একটি মাত্র কবিতার সমপরিমাণ পাঠকও টানতে পারি না! তাহলে 'কবিতার পাঠক কম' এ সান্ত্বনা আর ধোপে টেকে না। অন্যভাবে বলতে গেলে - আমরা কেবলই 'সৌখিন কবি', তাই আমাদের লেখার সৌকর্যে পাঠক টান অনুভব করেন না বলেই পাতায় পাঠকের বিচরণ কম।

‘রূপান্তর’ http://www.bangla-kobita.com/bodrul/post20150903025552/?s=published সম্পর্কে দু’টি কথা:

দীর্ঘদিন পর কবির কবিতা পেয়ে মন দিয়ে বারবার পড়লাম। পঙ্ক্তি-চরণের অলিগলির বিস্তৃত বিবরণ অতি সহজ-সরল ভাষায় গ্রন্থিত বিধায় শাব্দিক ব্যাখ্যায় না গিয়ে হৃদয়ে অনুভব করতে চাইলাম। কবি স্মৃতির ধুলোর হালকা আস্তরে আচ্ছাদিত করে অতীতের দৃশ্যের সাথে বর্তমানের পরিবর্তনকে যেভাবে চিত্রায়িত করেছেন তাতে কেবল এক বেদনাবিধুর 'নস্টালজিয়া'য় আক্রান্ত হতে হয়। সভ্যতার ক্রমোন্নতির নামে এই যে বিবর্তন - কবি যাকে 'রূপান্তর' বলে আখ্যায়িত করেছেন সে রূপান্তরে বৈভব আছে, সুখ নেই। সভ্যতার চাকচিক্যময় জেল্লা আছে চিরায়ত জীবনের ছবি নেই। আধুনিক সভ্যতার আয়েস থাকলেও প্রাণের ছোঁয়া নেই।


এই যে হারানোর বেদনা আর প্রাপ্তির মেকি তৃপ্তি - সেই অনুভবের দ্যোতনা কেবলই সংবেদী পাঠকচিত্তকে আন্দোলিত করে; ভাসিয়ে নিয়ে যায় বিগত দিনের ছায়ায়। নিকট অতীতের হারিয়ে যাওয়া চেনা সুরটিকে খুঁজে পেতে পাঠকমন আকুল হয় আর চিত্তে জাগে মিহি বেদনার অনুরণন! ক্ষণিকের জন্যে হলেও পাঠকমন সেই নিকট অতীতে ফিরে যায়; ‘নস্টালজিক’ ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়। কবিতাটি দেখতে সাদামাটা কিন্তু ভাব ও দ্যোতনায় হৃদয় ছোঁয়া।

পাঠকমনকে আবেশিত করা অমন সুন্দর কবিতার জনককে জানাই প্রাণের অভিনন্দন ও হৃদয়সিক্ত ভালবাসা।