লেখক পাঠক বন্ধুরা প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিন। দীর্ঘ বিরতির পর আবরো আপনাদের সামনে একটা বিষয় তুলে ধরছি। এ বিষয়ে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত কামনা করছি।


ডিজিটাল আশীর্বাদ - এই 'ইন্টারেক্টিভ মিডিয়া'র কল্যাণে আমরা অনেক শখের কবিই আজ নিজেকে অপরের সমক্ষে প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছি। এখানে পাঠক-কবিতে, কবিতে-কবিতে মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ রয়েছে বিধায় - পাঠক হিসাবে আমার কিছু দায় রয়েছে। তাই, পাতায় কেবল পড়েই যাচ্ছি না, কিছু মতামতও রাখছি। বাস্তবতার নিরীখে সেই মতামত প্রকাশের দায়বদ্ধতা যেন অনেকটা যান্ত্রিকও হয়ে উঠেছে তাই, কবিতার সঠিক মূল্যায়ন বিশ্লেষণের বিষয়টা অনেকটা গৌণ হয়েই থাকছে। বরং ব্যবসায়ীক বিনিয়োগের মতই কিছু স্তুতিবাচক শব্দ (যেমন; বাহ্, বেশ, সুন্দর, অনবদ্য, খাসা... ইত্যাদি) ব্যবহার করে আমরা দায়মুক্ত হচ্ছি। ফলে, রচনার প্রকৃত গুণাগুণ (গুণ ত্রুটি দুইই) তাৎপর্য উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।


পাতায় একটা রচনার বক্তব্য, দর্শন, কাব্যমান, শৈলী ও কারুময়তার বিচার বিশ্লেষণ নিয়ে (দু'একটি ব্যতিক্রম ছাড়া) খুব কমই আলোচিত হচ্ছে। ফলে রচনা এবং রচয়িতা - দুইই সমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছেন। আমাদের ঔদাসীন্যতার কারণে আমরা এই ‘ডিভাইস’টির যথার্থ আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিতও হচ্ছি। কেননা, একটা লেখার গুণগত মান নিয়ে পাতায় আলোচনা হলে লেখক যেমন প্রাণীত হতে পারেন গঠনমূলক নির্দেশনাও পেতে পারেন। তা পড়ে অন্য পাঠক-লেখক সেই সুবাদে নিজেকে সুগঠিত করতে পারেন। এভাবে নিয়মিত চর্চা হলে দেখা যাবে পাতায় বিচরণকারী লেখক-পাঠকদের অনেকেই বেশ পরিশীলিত হয়ে উঠেছেন। ক্রমে একটা বিশুদ্ধ সাহিত্যের আবেশ তৈরী হতে পারতো। কিন্তু তা না হয়ে এখন যা হচ্ছে তা হলো কৃত্রিম উপায়ে পাতায় মন্তব্যের সংখ্যা এবং পোষ্টের সংখ্যা বাড়িয়ে এক জাতীয় প্রতিযোগীতার ‘ইঁদুরদৌড়ে’ নিজেকে অগ্রগামী করে দেখানোর প্রবণতা বাড়ছে। এই প্রবণতা সাহিত্যের জন্য কখনোই কোন শুভ ফল বয়ে আনতে পারে না।


বিষয়টির প্রতি বিজ্ঞ লেখক পাঠক ও সামালোচকদের সুচিন্তিত মতামত জানার আকাঙ্ক্ষা রইল।