সাইটে অনেক কবিকেই দেখতে পাই, তাঁরা নিজের রচনার উপর বেশ আস্থাশীল এবং পরিতৃপ্ত। সতীর্থ কোন পাঠক যদি সৌন্দর্যায়ণ ও সংশোধনের স্বার্থে বিনয়ের সাথে কোন ইঙ্গিত করেন – কেউ কেউ মনঃক্ষুন্নও হয়ে থাকেন। কিন্তু একজন শিল্পী বা কবি সবার মতকে মর্যাদার সাথে বিবেচনা করলে তাঁর শিল্পমান বাড়ে বৈ কমে না।


বিনয়ের সাথে বলছি; আমি নিজে কবিতা লিখে কখনোই শতভাগ পরিতৃপ্তির সুখে ভাসতে পারি না। কেবলই মনে হয়; আরো ভাল হতে পারতো। তাই, কেউ কোন নির্দেশনা বা সংশোধনী ইংগিত করলে সাথে সাথে ষষ্ট-ইন্দ্রিয় জেগে উঠে, কৃতজ্ঞ চিত্তে তা বিবেচনার্থে প্রহণ করি। তার কতটুকু গ্রহণ করলে আমার কাব্যের শিল্পমান আরো বাড়বে তা বিবেচনা করে সেই বন্ধুর কাছে কৃতার্থ হই।


আমরা জানি; একজন কবি – একজন নিখুঁত শিল্পী। শিল্পকর্মের মধ্যে কবিতা খুব কঠিন শিল্প। মননে জাগা বিমূর্ত ভাবকে যথাসাধ্য মূর্ত করেই তাঁকে পাঠকমন জয় করতে হয়। তাই, কবি কখনোই তাঁর সৃষ্টিতে পরিতৃপ্ত হন না যতক্ষণ না পাঠককে পরিতৃপ্ত করতে পারেন। তাই, পাঠকের তৃপ্তিই কবির তৃপ্তি, তাঁর শিল্পের সার্থকতা। তখনই তিনি মনে করেন – এবার তাঁর শিল্পটি মোটামুটি সম্পন্ন হয়েছে। মোটামুটি বললাম এই কারণে যে, সেই কবিতাটি কখনোই শতভাগ পাঠকের মন জয় করতে পারে না।      


একজন শিল্পীর শিল্পকর্ম শিল্পী নিজে বন্ধ না করলে তা কখনো শেষ হয় না কিন্তু গণিতের একটা অঙ্ক শেষ করার পর আর কিছুই করার থাকে না। ওটা আপনাতেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ভাল শিল্পীর অতৃপ্তির তৃষাটা কখনোই যেন মিটতে চায় না। তিনি ভাল থেকে আরো ভাল করতে চান। যেন তিনি নিজের প্রিয়তমাকে বারবার নানান সাজে দেখে তৃপ্ত হতে চান। পূর্ণতা বোধ না করলেও বাস্তবতার প্রয়োজনেই এক সময় তাঁকে থামতে হয় তাই, থামেন। আর পরবর্তী শিল্পে আগেকার ঘাটতিটুকু তিনি পুষিয়ে নিতে চান। এভাবেই শিল্পী এবং কবি ক্রমাগত পরিশীলিত হয়ে উঠেন।


সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।