সেদিনটাও ছিল এমনই এক ১৫ই আগস্ট
সারাটাদিন মুখর রৌদ্রকরজ্জ্বল আবহে
কেটে গেছে বেলা, সন্ধ্যায় ঝকঝকে
আলোয় ভেসে গেছে অন্ধকার ।
আমি তখন নবম শ্রেণীতে পড়ি,
‘‘সেদিন পরনে ছেঁড়া ধূতি আর কাঁধে গামছা
হাতে চায়ের ভাঁড় আর একটি কেটলি
কন্ঠে ‘চায়ে...চায়ে.....গরম চায়ে....।’    
রেল স্টেশনে অনেক লোকের ভীড়
হঠাত্ কালো কম্বলে ঢাকা শরীর থেকে
বেরিয়ে এল কাঁপা কাঁপা একটি হাত
...এক কাপ চা খাওয়াবে ভাই আমাকে...!’    
দেরী না করে তত্ক্ষনাত গরম চায়ের ভাঁড়
হাতে ধরিয়ে দিয়ে আমি পিছন ফিরতেই
একদল ব্রিটিশ পুলিশ ঘিরে ফেলল লোকটিকে
ধরা পড়ল দীনেশ, বিনয় ধরা দেয়নি নিজেই শহিদ
বাদল হাসপাতালে শুয়ে নিজের মাথার খুলি উল্টে
মৃত্যু বরণ করেছে দেশমাতার স্বাধীনতার জন্য।’’
নাটক শেষে যখন বাড়ী ফিরছি তখনও
কেটলিতে কিছুটা গরম চা অবশিষ্ঠ,
হঠাত্ একদিদি পিঠে হাত রেখে বললেন -
তোমার অভিনয় নিখুঁত হয়েছে ভাই
এভাবেই প্রতিটি মানুষের জীবনে উষ্ণতা ঢেলে দিও।
সেদিন বুঝিনি, আজ ২৫বছর পর বুঝি সে কথার মর্মার্থ!
প্রয়োজন উষ্ণতা, যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছিলাম
গরম রক্তের ফোয়ারার মধ্যে অবিরত স্নাত হয়ে।
আমি খুঁজে ফিরি আজও সেই উষ্ণতা --
দেশ মাতার অস্তিত্ব রক্ষায় আদর্শের উষ্ণতা !
  -----------------------------------------
* বাস্তব জীবনের উপলব্ধি থেকে লেখা এই কবিতা।