আমার মা আমাকে বলে ছাগল
আর বাবা হেসে বলেন পাগল,
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন আমি সত্যজিৎ
মা'য়ের রক্ত আমার শরীরে অনুপস্থিত
তবে বাবার রক্তে গড়া  আমার ভিত,
আর আমি তার রামছাগল
অথবা বলদ, নয় বদ্ধ পাগল!
ভনিতা ছেড়ে আসল কথায় আসি
সংসারে সব কাজ করেও খাই বাসি,
জানেন, বাবা আমার খুব ভাল চাষী
মা'কে ছেড়ে আনল ঘরে এক মাসি,
বয়স তখন সবেমাত্র হবে বোধহয় নয়
বাবা বললেন - খোকা ইনি নতুন মা হয়,
মনের দুঃখে মা গেলেন পরলোক
বাবা এখন এই সমাজে ভদ্রলোক!
সৎ মা'য়ের পাঁচটি সোনার ছেলে
কেলে নীলে পুলে গুলে ও হেলে
কাজের মধ্যে ওরা খায় আর ঘুমায়
ঘর মোছা কাপড় কাচা সব আমায়,
সব মেনে যেতে চাই আমি স্কুলে
মা বলে পয়সা কোথা পাবো দুলে!
অগত্যা পাঠ বন্ধ সকলই সাঙ্গ
চেয়ে দেখি পাঁচ ভায়ের রঙ্গব্যাঙ্গ,
কেলে থাকে রঙিন জলে ডুবে
নীলে ভাই সুদ খাটায়, যায় ভুলে
পুলে গায় গান, গুলে বাজায় বেসুরে
বাকি থাকে হেলে, লোক ঠকিয়ে ঘোরে,
তবু ওরা হলেন সমাজে ভদ্রলোক
আমার হয়েছে জ্বালা নরক ভোগ!


একদিন বাবার মাথায় পড়ল ডান্ডা
সংসার হয়ে গেল একেবারে ঠাণ্ডা,
অবাক কাণ্ড ঘটল সেইক্ষণে
কাগজ কলমে দুলে ধনেজনে,
বাড়ি হাঁড়ি সবই ছিল আমার নামে
তাই আছি রাজার হালে এই ধামে,
তবে হ্যাঁ বসে নয় করি একটা কাজ
কথায় বলে না কাজে কিসের লাজ,
সকাল হলে মাঠ যাই পাঁচ বলদ নিয়ে
সারাদিন লাঙ্গল ঠেলাই ওদের দিয়ে,
মা করেন সকল কাজ রান্নাবান্না
শুধু বাজার করতে যায় এই মান্না,
এখন গোলা ভরা ধান মাছে ভরা পুকুর
বাড়ি পাহারায় রেখেছি ভেলো কুকুর,
দিন কেটে যায় বেশ মনের সুখে
ওরাও কেউ নেই তেমন কোন দুখে,
সাহসও নেই দাঁড়াবে আবার রুখে
এখন বুঝি বাবা রেখেছিল বুকে,
কেমন জব্দ হল মোর পাঁচ ভাই
সেই থেকে নেই কোন ঠাঁই ঠাঁই,
ওরা সবাই আমায় মানে ছয়জনে
দিনে দিনে বাড়ছে মানে আর ধনে,
করবো এবার বিয়ে দেখুন কন্যা
রূপে আর গুণে হয় যেন সুলগ্না!