মায়া চোখে তাকাই থাকতি,
মুখটি ধরে আদর দিতি।
কাঁদতাম যখন একা অসহায়,
যতন করে কোলে রাখতি আমায়।
মাটির সাথে করতাম খেলা,
গড়াই গড়াই কাটাইতাম বেলা।
ব্যথা পেলে কাঁদতাম যখন ফুলি,
কাদা মাখা কায়া, কোমল হাতে নিতি তুলি।
মাঝে মাঝে দু-বাহু মেলে,
নীলিমার দিকে দিতি পেলে।
পড়তাম আমি ভেসে ভেসে!
ধরতি আমায় ভালবেসে।
গগনের দিকে হাতটি তুলতি,
জ্যোৎস্না রাতে চাঁদ দেখাইতি।
মল ছাড়তাম কাঁথা, পোশাক ভরি
পরিষ্কার করতি খুব যত্ন করি।
হাত-পা ভরে থাকত ধুলায়,
ধুয়ে দিতি বুলাই বুলাই!
মাঝে মাঝে বলতি আমায় আল্লাহ আল্লাহ গাও,
হঠাৎ করে বলে উঠতি আল্লাহ, পুত্রকে জ্ঞান-শক্তি দাও।
পুষ্টি ওদন লুকাই রাখতি,
চুপি চুপি আমায় খাওয়ায়তি!
পড়া-লেখার হেতু ধরে,
পাঠায় দিলি অনেক দূরে।
ভাল মানুষ বানাবি বলে,
রেখে দিলি আমায় হোস্টেলে।
ভাল লাগে না কেন?
মন বসে না কেন?
মনে হত, দিতে হবে কোন পথ পাড়ি
মা, তোমার কাছে যেতে মন বলত ভারি।
তুমি বিহনে ছিল কত যন্ত্রনা আমার,
হৃদয়ে বেজেছে হাহাকার, মা তোমার শুন্যতার।
তোমার টানে, চুরি করে যেতাম আমি বাড়ি,
দেখে! দুই বাহু মেলে চুমা দিতে ভারি।
এ কী স্নেহ, এ কী ভালবাসা আর মায়া!
তোমায় পেয়ে সব ভুলে, পেতাম স্বর্গের ছায়া।
সেই ছোট বেলায় তোমার অনুপস্থিতি থাকা যখন,
মা আমার প্রাণের ধন, বুঝেছি আমি তখন।
অধুনা তোমায় খেয়াল করেছি যতক্ষন,
পুত্রের জন্য দোয়া করছ তুমি সারাক্ষন।
অপরাধ, অবাধ্য তোমায় করেছি যত,
দুঃখ পেলেও তুমি ক্ষমা করেছ তত।
হালে তোমার দোয়া নিয়ে ঘুরি সারাবেলা,
কেন করি তোমার স্নেহ, মায়া, ভালবাসার অবহেলা?
মনস্তাপ, মা মায়া অনুভব করি যখন,
শোভাময় মা মুখের স্নেহ, মায়া ভেসে উঠে তখন।
সর্বদা প্রাণ ভরে দেখব তোমায় বড় আশা,
সত্যিই মা গো, তোমার প্রতি আছে অতীব ভালবাসা।
এখনো মা, অনুভব করি তোমার স্নেহ, মায়ার বাঁধন
বাঁচতে চাই মা গো, তোমার ভালবাসায় সারাটি জীবন।
আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে বলি-
জম্ম থেকে যেমনি আমায় করেছ লালন,
আল্লাহ তেমনি মা কে করিও পালন।