ব্যথার সাতার-পানি-ঘেরা
চোরাবালির চর,
ওরে পাগল! কে বেঁধেছিস
সেই চরে তোর ঘর?
শূন্যে তড়িৎ দেয় ইশারা,
হাট তুলে দে সর্বহারা,
মেঘ-জননীর অশ্রুধারা
ঝ’রছে মাথার’ পর,
দাঁড়িয়ে দূরে ডাকছে মাটি
দুলিয়ে তরু-কর।।


কন্যারা তোর বন্যাধারায়
কাঁদছে উতরোল,
ডাক দিয়েছে তাদের আজি
সাগর-মায়ের কোল।
নায়ের মাঝি! নায়ের মাঝি!
পাল তু’লে তুই দে রে আজি
তুরঙ্গ ঐ তুফান-তাজী
তরঙ্গে খায় দোল।
নায়ের মাঝি! আর কেন ভাই?
মায়ার নোঙর তোল্‌।


ভাঙন-ভরা ভাঙনে তোর
যায় রে বেলা যায়।
মাঝি রে! দেখ্‌ কুরঙ্গী তোর
কূলের পানে চায়।
যায় চ’লে ঐ সাথের সাথী
ঘনায় গহন শাঙন-রাতি
মাদুর-ভরা কাঁদন পাতি’
ঘুমুস্‌ নে আর, হায়!
ঐ কাঁদনের বাঁধন ছেঁড়া
এতই কি রে দায়?


হীরা-মানিক চাসনি ক’ তুই,
চাস্‌নি ত সাত ক্রোর,
একটি ক্ষুদ্র মৃৎপাত্র-
ভরা অভাব তোর,
চাইলি রে ঘুম শ্রানি–হরা
একটি ছিন্ন মাদুর-ভরা,
একটি প্রদীপ-আলো-করা
একটু-কুটীর-দোর।
আস্‌ল মৃত্যু আস্‌ল জরা,
আস্‌ল সিঁদেল-চোর।


মাঝি রে তোর নাও ভাসিয়ে
মাটির বুকে চল্‌!
শক্তমাটির ঘায়ে হউক
রক্ত পদতল।
প্রলয়-পথিক চ’ল্‌বি ফিরি
দ’লবি পাহাড়-কানন-গিরি!
হাঁকছে বাদল, ঘিরি’ ঘিরি’
নাচছে সিন্ধুজল।
চল্‌ রে জলের যাত্রী এবার
মাটির বুকে চল্‌ ।।