বাবা বলতো, পড়ে রাখিস বাল্যশিক্ষা,
মুখস্থ চাই সব উদ্ধৃত কথা
"জীবে প্রেম করে যেইজন,
সেইজন সেবিছে ঈশ্বর"
"আপনাকে বড়ো বলে, বড়ো সে নয়,
লোকে যাকে বড়ো বলে, বড়ো সে হয়"
"লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু "
"ধৈর্যই মহৎ গুন্"
"সততাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম"
হ্যাঁ, আমি পড়তাম, মুখস্থ করতাম,
পড়তে পড়তে আমার চরিত্রটিও,
কবে সেইরকম হয়ে গেলো, টেরই পাই নি,
কিন্তু কেন জানি না, মনে হয়,
আমি সকলের থেকে পিছিয়ে গেলাম,
চোখের সামনে সব উল্টো,
হতে দেখছি, মনে হচ্ছে,
ওই যে বাল্যকালের শিক্ষাগুলি সব ভুল,
এখন তো, "অসততাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম"
"অসততাই সাফল্যের চাবি-কাঠি"
মা বলতেন, গুরুজনদের প্রণাম করবে,
শ্রদ্ধা করবে, তবেই আশীর্বাদ পাবে,
কিন্তু আমি যে গুরুজনদের,
প্রণাম করে গেলাম, তাঁরা কি সত্যিই!
মন থেকে কোনোদিন পেরেছেন?
আমার ভালো চাইতে?
এতো সুবোধ হওয়ার কি সত্যি
কোনো দরকার আছে? বা ছিল?
আমাদের সমাজ কি বলছে?
"তোমার যা খুশি করো"
তা যদি ব্যাভিচার হয়?
"ক্ষতি নেই, করে যাও"
লোকে কিছুই মনে রাখে না,
আজ খারাপ, কাল ভালো.
আমি ঠিক করলাম, তাই করবো.
কিন্তু আমার মনটা?
সে কেন জানি না
'দোষী' অনুভূতি থেকে মুক্তি চায়
একমুহূর্ত সে দোষী হতে পারবে না
সমাজের জন্য নয়,
আমি আমার জন্যেই পারলাম না
খারাপ হয়ে, ভালো হতে,
আমার কাছে, ভালো মানে
একটি শব্দ নয়,
একটি পবিত্র অনুভূতি,
হ্যাঁ,মেনে নিলাম, সবকিছু,
যদিও গেলাম পিছিয়ে,
সময়ের দ্রুততার সাথে,
পারলাম না তাল মিলাতে,
তবুও আমি জানি,
আমি ভালো, আমি ভালো.
আমার শান্তি তো আমার কাছেই.
আমার মন যে বাতাসে উড়তে পারে,
সে যে খুব হালকা,
তার উপর কোনো চাপ নেই,
কোনো অন্যায় বোধ নেই,
হ্যাঁ, আমি সুখী,
আমি আমার মতো করে খুশি.