কত না দুঃখের তিমির রাত্তির পার হয়ে
রক্তস্রোতের মোহনা বেয়ে স্বপ্নের সাম্পান
বিজয়ের বন্দরে ভিড়ার প্রাক্কালে পাষণ্ড
ঘাতকের দল সুনির্মল হৃদয়ের মানুষগুলোকে
একে একে ধরে, ঘরে ও বাহিরে, নগরে বন্দরে
পথে ও প্রান্তরে মেতে ওঠে নিধনের
নারকীয় উল্লাসে। সেই দুর্মর সময়ের সাক্ষী
হয়ে আছে এদেশের অগণিত বধ্যভূমি।


জনতার চোখের তারায়, পাড়ায় পাড়ায়
পাখিদের কলকণ্ঠে সংগ্রামের চেতনায়
ভোরের সূর্যের মতো আলোকিত বিজয় কেতন
আকাশে উড্ডীন হতে মাত্র দুটিদিন বাকী।
এই সহর্ষ বিজয় ঠেকাতে গোপনে
গোপনে ভয়ংকর আঁতাতে ঘাতকেরা মাতে
এদেশের সূর্যসন্তানদের নির্দয় বধের উল্লাসে।


শেখ মুজিবের এক ডাকে দৃঢ় সংহতির
সশস্ত্র সংগ্রামে যারা দিয়েছে প্রাণ তাদের
জীবনের অগ্নিতেজ দেখে, তাদের রক্তের
লোহিত কণিকা চোখে বুকে ও ললাটে মেখে
তেজস্বী বাঙালি গর্জে ওঠে বজ্রের অধিক আওয়াজে
দুঃশাসনের শিকল ভেঙে আনে আরাধ্য বিজয়
আনে বাংলাদেশ, আনে স্বাধীনতা ও পতাকা।


সেই থেকে কেটে গেছে পঞ্চাশ বছর। তবুও অক্ষয়
এসব প্রাণের মেলা বসে সক্ষত্র সভার মতো
প্রতিটি বধ্যভূমিতে চৌদ্দ ডিসেম্বর। আর তারা
সগৌরবে ফুলে ফুলে শ্রদ্ধায় বরিত হয়।
সবুজ ঘাসের বুকে তাদের পবিত্র রক্তে আঁকা
শোভন পতাকা সদর্পে আকাশে ওড়ে আর
বাতাসের কানে তাদের অমরত্বের কথা কয়।
১৪-১২-২০২১