একটি তর্জনী শূন্যে ভাসে
লক্ষ জনতা দল বেঁধে আসে
জনসমুদ্রে পরণিত রেসকোর্স ময়দান
মুক্তিমানবের কণ্ঠে বাজে মুক্তির জয়গান।
মহাকাব্যের কবি শোনালেন
এক অমর কবিতা,
মহাকাব্যের কবি শেখ মুজিবুর রহমান
বাঙালি জাতির পিতা।


তর্জনী তুলে ঊর্ধ্ব আকাশে গর্জে রাজাধিরাজ
বাঙালি জাতিকে শৃঙ্খলমুক্ত করে ছাড়বোই আজ।
নিপীড়িত বাঙালি মানবে না আর কারো অধীনতা
রক্ত দিয়ে আনবোই আনবো বাংলার স্বাধীনতা।
“এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
যখন তাঁর বজ্রকণ্ঠে বাজে
ইয়াহিয়ার হৃদয় ফাটে অগ্নিশর্মা লাজে।
শত্রুর মোকাবেলা করার তেজোদ্দীপ্ত সাহস
ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার উদাত্ত আহবান;
ঘুমন্ত বাঙালির রক্তে ডেকে ওঠে
স্বাধীনতার ঝড়তুফান।


কোটি জনতার মুষ্টিবদ্ধ হাত
স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল, উদ্দীপিত;
শক্রুর তাক করা রাইফেল দেখেও
হয়নি কেউ মৃত্যুভয়ে ভীত।
জনতার হৃদয়ে জমা অগ্নিবারুদ
মুহূর্তেই ছড়ায় সারা বাংলায়
বিশ্বস্ত নেতা বঙ্গবন্ধুর একটি;
শুধুমাত্র একটি তর্জনীর ইশারায়।


আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে
সমবেত জনতার কণ্ঠে ধ্বনিত হলো-
“আপোস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগাম”
অভভ্রভেদী চিৎকারে;
উত্তাল জনসমুদ্রের ঢেউ লাগে সারা বাংলায়
শক্তি নেই কেউ রোধিতে পারে!


তারপর, সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পথে হেঁটে
কাটে নয় মাস।
রচিত হয় সুদীর্ঘ সংগ্রামের নতুন ইতিহাস।


শেখ মুজিবের স্বাধীনতার ডাকে
বীর বাঙালি লড়ে নির্লজ্জ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে;
লাখে লাখে দেয় তাজা প্রাণ
শোষণ নিপীড়ন প্রতিরোধ যুদ্ধে।


অবশেষে আসে স্বাধীনতা, আসে বিজয়;
তিরিশ লক্ষ তাজা প্রাণের ক্ষয়ে
লাল-সবুজের পতাকাটি একান্ত আমাদের হয়।


সহস্র বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির
একটি তর্জনীর ইশারায়
আজন্ম লালিত স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ
অহংকারের ঠিকানা বাঙালি খুঁজে পায়।


অন্যায়ের কাছে বাঙালি কখনও
মাথা নোয়াবার নয়;
তাই বারেবারে স্বাধীনতার সঞ্জীবনী মন্ত্র
বাঙালির কণ্ঠে ধ্বনিত হয়-
“জয় বাংলা”...
৭-৩-২০১৭