সুফির তর্জনি স্পর্শে পাপভারানত জরাগ্রস্ত আত্মা
জেগে ওঠার মতন পিতার তর্জনি বেয়ে সঞ্চারিত
চেতনাতড়িৎ তরঙ্গের ঝলক জাগিয়ে তোলে
কোটি বাঙালির ঘুমন্ত অন্তর। আর তারা ঝাঁকে ঝাঁকে
লাখে লাখে আলোক পিয়াসী পতঙ্গের মতন ঝাপিয়ে-
পড়ে মুক্তির মিছিলে। অতঃপর তাদের শরীর
থেকে রক্ত নিয়ে আঁকে গৌরবের নান্দনিক
নতুন নিশান। বিশ্ববাসী অবাক বিস্ময়ে দেখে
বাংলাদেশ নামের এই রাষ্ট্রের মনোরম অভ্যুদয়।
আর আমি উপভোগ করি স্বাধীন সত্তার স্বাদ
মায়ের বুকের দুধপান উষ্ণতার অনুপম উপমায়।


বার বার ভাগাড়ের শকুন-শ্বাপদ খামছে ধরেছে
এদেশের বুক। ভাগ্য নিয়ে খেলেছে নির্দয় খেলা।
স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরেও দেখি গোপন ঘাতক
হয় উদ্যত কাড়তে সুখের সঞ্চয়। বিচূর্ণ করতে
চায় আমাদের অমলিন অহংকার। বাহিরে বঙ্গবন্ধুর
আদর্শের চটকদার মুখোশ; ভেতরে বিপরীত স্রোত
প্রশ্নবিদ্ধ করে দিতে চায় পিতার পৌরুষদীপ্ত
অদমিত সেই তর্জনির সঞ্চায়িত শক্তির ঝংকার।


ওরা জানে না এখনো জেগে আছে লক্ষ কোটি
সন্তান অক্ষিতে আগুনের গোলা নিয়ে; যারা
একদিন এনেছিলো স্বাধীনতা; এসকল দুর্বৃত্তের
দুর্ভেদ্য দেয়াল ভেদ করে। ওরা জানে না এখনো
উদ্দীপ্ত অযুত তরুণ মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে প্রস্তুত;
তারা উঠে-বসে পিতার সেই তরঙ্গায়িত
তর্জনির নিয়ন্ত্রণে; যে তর্জনিস্পর্শে কলবে প্রথম
স্পন্দন জেগেছে ‘জয় বাংলা’ মন্ত্রের জিকিরে।
প্রতিটি সংকটে সকলের অগোচরে তেজস্বী রোদ্দুরে
পিতার তর্জনি বেয়ে নেমে আসা জাগরণী
জিকিরে জাগ্রত হয় আজো বাঙালির বিক্ষত হৃদয়।
ওরা ভুলে গেছে, পিতার পবিত্র তর্জনির ইঙ্গিতেই
নিশ্চিত হয়েছে আরাধ্য বিজয়। এখনো তারই
অদৃশ্য ইঙ্গিতে আমাদের প্রাণ মৃত্যু আলিঙ্গনে মুখরিত হয়;
পিতার অভ্রোত্থিত তর্জনি প্রলুব্ধ করে সোজা হয়ে
দাঁড়াতে অসংখ্যবার ।
০৯-১২-২০২১