[জীবনের প্রথম প্রেমের কলি যা ফুটার আগেই বাগান থেকে ছিড়ে নেয় অন্যজন। সেই হারানো প্রেম ও তার বাক প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য নিবেদন]
একটি পাখি বুকের খাঁচায়
যতনে বেঁধেছিল বাসা
দুই চোখে তার স্বপ্ন ছিল
মনে অনেক আশা।
সেই পাখিটা সাঁঝ-সকালে
গাইত মধুর গান
আনন্দে তাই মাতোয়ারা
মুগ্ধ হতো প্রাণ।
বুকের ভিতর সেই পাখিটা
করতো আসা-যাওয়া
মনের সুখে বলতাম আহা
কী যে পরম পাওয়া।
সেই পাখিটা হরহামেশা
করতো আনাগোনা
ডানা মেলে ঊড়ত শুধু
ধরতে ছিল মানা।
হঠাৎ একদিন আসল বেগে
সর্বনাশা কালবোশেখী ঝড়
ঝড়ের তোড়ে ঊড়ল সবই
ভাঙল পাখির ঘর।
যতন করে যেই পাখিটা
পোষলাম জনম ভর
সে যে আমায় ভুল বুঝিয়া
করে দিল পর।
ভুল বুঝিয়া খাঁচার পাখি
ঊড়ে গেল বনে
বাঁধল বাসা নতুন করে
অন্য কোনখানে।
সেই পাখিটা নতুন করে
বাঁধল সোনার নীড়
দেখতে তারে এলো সবাই
পড়ল সেথায় ভীড়।
ভীড়ের মাঝে নীড় হারানোর
যায় কি ব্যথা ভুলা
সুখের মাঝেও দুখের হাওয়া
দেয় যে তারে দোলা।
বুকের খাঁচা ছেড়ে যেদিন
সোনার খাঁচায় ঢোকে
সেদিন থেকে গান ভুলে সে
ব্যথা ভরা বুকে।
সোনার খাঁচায় বন্দি পাখির
হইল দুইটি ছানা
আদর করে রাখল ঢেকে
মেলে মায়ার ডানা।
দুঃখ ভুলে সেই পাখিটা
গাইল আবার গান
ছা দুইটিকে বাসল ভালো
উজার করে প্রাণ।
হঠাৎ করে একটি ছানার
হইল ভীষণ জ্বর
মা পাখিটা আঁতকে ওঠে
পাইল ভীষণ ডর।
ভাবল বসে আবার বুঝি
এলো জলোচ্ছ্বাস
কেড়ে নিবে বুকের মানিক
করবে সর্বনাশ।
আশায় থাকে মা পাখিটা
শুনবে ছানার ডাক
হায় বিধাতা একি করলা
কাড়ল ছানার বাক।
বাক হারানো ছানার তরে
কত যে মানত করে
দান করিল দরগাতে আর
সিন্নি খোদার ঘরে।
এমনি করে দুঃখের সাথে
দিন যে গড়ায় মেলা
সান্তনা দেয় নিজের মনে
সবই ভাগ্যের খেলা।