তুমি আসবে বলে
পাথর চোখের কোটর ক্ষয়ে নেমেছিল অশ্রু—মিছিলের ঢল
ফেরারি ফাগুন কড়া নেড়েছিল হৃদয় বসন্তের রিক্তদ্বারে
কৃষচূড়ার রক্তিম ঠোঁটে ফুটেছিল মোনালিসার রহস্যময় হাসি।


তুমি আসবে বলে
পাঁজর ভাঙা দীর্ঘশ্বাসে বুকের ভেতরে উঠেছিল অনাবিল আনন্দের ঝড়
বসাই বনে কোকিলার কণ্ঠে শুনেছিলাম মুগ্ধ মধুর কুহু কুহুতান
প্রকৃতির পাঠশালায় শিখেছিলাম প্রেম প্রীতি ভালোবাসার শুদ্ধতম পাঠ
পথের তুচ্ছ তৃণদল হংস মিথনের কেলাহল ভালোবেসেছিলাম।


তুমি আসবে বলে
কুমার কূলে বেঁধেছিলাম স্বপ্নের রঙে রাঙা লতাগুল্মের ঘর
রং—ধনুর সপ্ত রঙে রাঙিয়েছিলাম  ভালোবাসার স্বপ্নিল বাসর
ভালোবেছিলাম পাখ—পাখালির কলবর নদ—নদীর মুক্ত কলতান
অবারিত সবুজের মাঠে নীরবে নুয়ে পড়া নীল আকাশ।


তুমি আসবে বলে
অনুভূতির আদিম উতায় গড়েছিলাম মোমের মূর্তি
জোনাকির ক্ষ্মীন আলোয় দেখেছিলাম অদ্ভুদ আঁধারের নৃত্য
নিঝুম রাত জাগা নির্ঘুম রাতে গোনতে শিখেছিলাম অন্তহীন প্রতীক্ষার প্রহর
দুধজোছনার প্লাবিত রাতে কবিতার সঙ্গে করেছিলাম আলিঙ্গন।


তুমি আসবে বলে
প্রতীক্ষার প্রহরে পথ চেয়ে চেয়ে ক্ষয়ে গেছে চোখের দৃষ্টি আমার
দীর্ঘ বিনাদর্শনে বদলে গেছে মন মরে গেছে প্রতিটি ক্ষণ
তোমার আর ফিরে আসার সেই কোনো প্রয়োজন।