তোমার আহ্বান ছিল আমায় মৃত্যু উপহার দিতে চেয়ে,  
তা আমার ছিল না জানা!
তাই নিষ্পাপ অপেক্ষায় ছিলাম দাঁড়িয়ে তোমার জন্যে,
ঠিক খুঁজে নিয়েছিল তোমায়—আমার দুচোখ,বিপুল জনারণ্যে;
তারপর হাত ধরে নিয়ে গেছ জীবন্ত নদীর ধারে!
ক্রমে ক্রমে চিনিয়েছ মৃত্যু ভূমির সবুজ ঘাসের প্রান্তর,  
কাপালিকের অর্থহীন মন্ত্রোচ্চারণের মতো,
ইনিয়ে বিনিয়ে শুনিয়েছ হাজারো ইতিহাস পাতা—
শুধু ঠিকানা বদলের হিসেব শোনাবার ছলে!
আর আমি কুড়িয়ে চলেছি তখন মৃত বিশ্বাসের টুকরো,
খণ্ডে খণ্ডে ছড়িয়ে পড়ছে যা তোমার খড়্গাঘাতে।
সবশেষে সউল্লাসে সিদ্ধ করেছ যখন নিজেকে—
আমার রক্তে করেছ স্নান—ছড়িয়ে দিয়েছ চারিদিকে,
নদীবুকে সন্ধ্যা আলোয় যখন ভাসাতে পেরেছ আমার শব,
তখন আমি মৃত চোখের তারায় শুধু দেখে গেছি তোমায়!  
হয়তো তুমি তারপরও গেছ অনেকবার সে নদীর ধারে;
সবুজ গালিচা এখনো রয়েছে পাতা সেই প্রান্তরে,
যদি দেখ চেয়ে মুঠো খুলে আপন হাতের, তবে পাবে দেখা—
আমার রক্তে যেদিন তুমি খেলেছিলে তৃপ্ত হোলি,
সে রঙের দাগ এখনো যায়নি মুছে;হয়তো যাবে না কখনো
গাছের পাতা হতে—ঘাসের শরীর হতে,হয়তো মন্দিরেও;
একবার মুঠো খুলে দেখ সেখানেও পাবে—
কালশিটে প্রতি দাগে আমার রক্ত ছায়া!
তবু আছি বেঁচে হয়তো অকারণ কোন অতীতের সাথে,
শুধু দেখতে চেয়ে ইতিহাস ছবি বায়স্কোপ জানালায়!
তাই সে নদীর স্রোতে এখনো যাই ভেসে—
বহুকাল হতে সকল জোয়ার ভাটায়!
তোমার দেওয়া উপহার বুকে চেপে—
মাথার খুলিতে জেগে থাকা দৃষ্টির গভীর তারায়!  
মৃত্যুর পরও শুধু তোমার জন্য—
শুধু তোমার জন্য বাধ্য রয়েছি বেঁচে,অবয়বহীন অসহায়।