জানালায় দাঁড়িয়ে রয়েছি প্রতি রাতের মতো—
দাঁড়িয়ে রয়েছি আজও ঝাউয়ের শীর্ণ পাতায় পেতে কান,
ঝিঁঝি দের আর্তনাদে হাসনুহানার নিষ্ফল জীবনের হাহাকারে!
আঙুলে চেপে ধরা জীবন্ত আগুন উন্মাদ হয়ে পুড়ছে,শুধু ছুটছে—
ছুটছে প্রতি রক্ত স্রোতে, ঘূর্ণির সাথে ভাসছে উন্মত্ততায়,
ভেসে চলেছে বাধাহীন অন্ধকারের বুক চিরে পোড়া শরীরের বাষ্প!
তবু আমি দাঁড়াই তির্যক ঠোঁটে ঠোঁট রেখে প্রতি রাতে,
হয়তো পরশুরামের মতো, কিংবা অভিশপ্ত গন্ধর্বের মতো,
আমি কোনও অমর্ত্যকুলোদ্ভব নই, নই কোন অভ্যুদিত দানব,
হয়তো শুধু এক অমাত্রিক জীবন, তাই বড় বালাই, বড় আপদ।  
তবু মৃত শরীরের নীচে বেঁচে থাকা অনন্ত ফল্গুধারা চিরশান্ত,
কিংবা,চিরচঞ্চল!রাতজাগা পাখির মতো—
বাদুড়ের ডানার মতো শুধু বিচরণ বিস্তৃত রণভূমি জুড়ে!
বায়োস্কোপ জানালার ওই পারে যখন যায় মুছে আলোর রঙ।
আমার আমি নিমগ্ন তখন নিজেরই সম্মুখে যুদ্ধের বেশে—  
শুধু অকারণ রণহুঙ্কার!শুধু অকারণ যুদ্ধ যুদ্ধ জীবন অসম্ভব বিদ্রোহী,
কিংবা কখনো নামহীন, গোত্রহীন,মৃত সেনানীর লাশের মতো,
শৃগালের দাঁতে জমে ওঠা অসহায় রক্ত রঙের মতো—
তুমি জানো এসব, সবই!তাই তুমি অশরীরেও জানিয়ে যাও শরীরী উপস্থিতি,
জন্ম সাথীর মতো,সুন্দরী অমানিশা,প্রিয়তমা!পরমাত্মীয়া,
তোমার নক্ষত্রখচিত শরীরের আহবান করিনি কখনো প্রত্যাখান—
তাই তোমার গোপন আলিঙ্গনে নিদারুণভাবে ডুবিয়ে রাখ আমায়,
ডুবিয়ে রাখ আদিকালের মতো, নির্বাসিতের সম্বলের মতো,
সে যে তোমার মহত্ব, হয়তো সে তোমার করুণাও হতে পারে,
সে মহত্ব জুড়ে থাক আমার সাথে, জুড়ে থাক সকল করুণা,
তোমার যে কোনও ছলনা নেই!এমনকি নেই কোনো রঙ,
তাই ভয় নেই বেরঙ্গীন হওয়ার, বেরঙ্গীন দেখার—
তাই তুমি বড় নিরাপদ আশ্রয়,
উদবাস্তু নির্গৃহ যাযাবরের অন্তিম ঠিকানা!  
তাই দাঁড়িয়ে পড়ি প্রতি রাতের মতো—
দাঁড়িয়ে রয়েছি আজও ঝাউয়ের শীর্ণ পাতায় পেতে কান,
হতে চেয়ে লীন তোমার গভীর আলিঙ্গনে, হে প্রিয়তমা....!!!!