কোনো এক নিস্তব্ধ বিকেলে তুমি ছিলে আমার সঙ্গে,
হয়তো ভীষণ অগোছালো ভাবে আমিও ছিলাম সঙ্গে তোমার—
আসলে আমি যে চাই বিদ্যুতের মতো বহুধা বিভক্ত হতে—
আমি জানি না কোনোকিছু গুছিয়ে রাখতে;
তাই সব ছিল ছড়ানো, সকল বলা, সকল চলা—
এমনকি ইচ্ছেগুলোও—
ইচ্ছেগুলোকে সুক্ষ্ম আলোর রেখায় ছড়িয়ে রাখতে চাইছিলাম,
সব ঠিক পরের পর ছড়ানো শিউলির মতো।
সবকিছু এলোমেলো করে রাখা সারাক্ষনের মধ্যে—
তোমায় আঁকতে চাই বলে সাজিয়ে গুছিয়ে।
আসলে,পরিপাটি থাকতে পারিনি কোনোকালে,
দেখতে চাই নি তাই তোমাকেও ওভাবে; তা থাকা মানে তো—
তোমায় নিয়ে ভাববার আর কিছু থাকে না,
তুমিও আমায় নিয়ে ভাববার আর কিছু পাবে না,
সে আমার ভালো লাগে না—
সেদিন সেই পার্কে মুখোমুখি বসা ছেলেমেয়েটির কথা তুমি বলেছিলে,
নদী থেকে উঠে আসা বাতাস—
খুব দুষ্টুমি করছিল মেয়েটির এলোচুলে,
আর মেয়েটি যতবার তা ঠিক করে নিতে চেয়েছিল,
ছেলেটি থামিয়ে দিচ্ছিল!
সেসব আমিও দেখেছি, হয়তো তোমার মতো করে নয়—
তাই তুমি অকারণ ঈর্ষা আর ভাবনাকে দিয়েছ প্রশ্রয়!
ওসব তোমার মিথ্যে ভাবনার অকস্মাত্‍ আড়ম্বর মাত্র,
আসলে বাতাস তো শুধু ওই মেয়েটিকে ব্যস্ত করে তোলেনি—
সে তো তোমার সঙ্গেও ছিল!
তুমি তখন অপলক দৃষ্টিতে দেখছিলে অশান্ত নদীর ঢেউ,
আর ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে ওঠা আমার হাতের মুঠোয়—
তোমার হাত ছিল শান্ত, বাধ্য, হয়তো বড় অসহায়।
পশ্চিম আকাশে তখন সূর্য হলুদ রঙ মেখেছিল;
আর তোমার বাসন্তী রঙ ওড়না—
সে বড় অবাধ্য! বার বার ঢেকে দিচ্ছিল তোমার মুখ,
তোমার অবচেতনে এলোমেলো হয়ে থাকা সবকিছু—
সকলকিছু দেখেছি তখন পলকহীন—
এঁকেছি ভাস্করের ঘাম ঝরানো রক্ত রঙে;
হাতুড়ি ছেনির ঘায়ে যখন তোমার শরীরের প্রতিটি ঢেউ,
কোনো অজ্ঞাত গভীরের অসীম তৃপ্তিতে ফুটেছিল,
তখনো আমার দৃষ্টি সরেনি তোমার কোনখান হতে,
তারপর বহু বিভঙ্গ শেষে তোমার চোখ যখন আধবোঝা—
আমি তখনই মুছেছি উত্তরীয় দিয়ে আমার শেষ ঘাম,
হয়তো তোমায় সাজিয়ে ফেলেছি তখন; আমার ক্যানভাসে!
তারপর বাতাস গিয়েছে থেমে,নদী হয়েছে শান্ত!
সূর্যের শেষ হলুদ আলো তোমার বাসন্তী ওড়নায় মাখামাখি,
সন্ধ্যা সমাগম—এবার চলো,যাই ফিরে—হয়তো চিরকালের মতো,
আবার অন্য কোনো ক্ষণে সাজাব তোমায়, অন্য কোনো কালে—
এলোমেলো করে দেওয়া অবাধ্য অচেনা বাতাসের হাত ধরে,
অন্য কোনো জন্মে যদি মিলি এমনি অগোছালো একসাথে।