রচনা কাল – ১৯৮৬


এখন প্রায়ই অতীতকে মনে পড়ে খুব বেশী করে,
সেই কবেকার ফেলে আসা দিনগুলো
প্রায়ই সামনে এসে দাঁড়ায়!
মনে পড়ে –
স্কুল ছুটি শেষে কোন ছোট্ট খাদে নেমে;
মাছ ভেবে ব্যাঙের পোনা ধরে
কচুপাতায় নিয়ে বাড়ি ফিরতাম
হাতে পায়ে কাদা মেখে বিজয়ীর বেশে।
হয়তোবা সে অবস্থা দেখে
মা কড়া ধমক দিতেন,
অথবা চপেটাঘাত করে
আমাকে সাদর সম্ভাষণ জানাতেন,
অতঃপর প্রচন্ড হাঁসিতে ফেটে পড়তেন।
এ বোকামী ধরা পড়ার পর
নিজেকে দারুণ অপরাধী ভাবতাম।
মনে পড়ে সকল আত্মীয়ের কথা,
মনে পড়ে ফুফুদের কথা -
হয়তো শীতের দুপুরে
কিম্বা গ্রীষ্মের সকালে,
তাঁদের বাড়ি থেকে
নিজের বাড়ি ফেরার সময়
সব ফুফুই পরম স্নেহে
মাথায় হাত বুলিয়ে বলতেন
আবার আসিস বাপ!
মনে পড়ে প্রয়াত পিতার কথা,
বাড়ি থেকে চাকুরীস্থলে ফেরার সময়
আমার আত্মজকে জড়িয়ে ধরে;
আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন
অথচ আমি বিচলিত হইনি একটুও।
কিন্তু এখন তিনি আর নেই!
তাই এখন সে স্মৃতি মনে পড়ে
হৃদয় উদ্বেলিত হয়ে উঠে।
মনে পড়ে সেই ঘুঘু ডাকা গ্রীষ্মের দুপুর কিম্বা
বসন্তের আগমনে কোকিলের কুহু ধ্বনি।
মনে পড়ে বৈশাখী ঝড়ের কথা,
আব্বা আম্মা বলতেন –
খবরদার ঘর থেকে বেরোবেনা ঝড়ের সময়,
সবকিছু মনে হয় কেমন জীবন্ত!
ফেলে আসা সেই দিনগুলো
ফিরবেনা কখনও আর
কিন্তু তবুও মনে হয় –
সকল মানুষই সম্ভবতঃ তার অতীতকে
প্রায়ই মনে করে ভীষণ ভাবে!