বছর ঘুরে ঈদ আসিছে মুসলমানের ঘরে
ঈদটা হবে যদি সবার মন খুশীতে ভরে।
যার উঠে না চুলায় হাড়ি মাসের আধেক দিন
ঈদের চাঁদের বাঁকা হাসি বড়ই হৃদয়হীন।
ছিন্ন পোশাক যাদের লজ্জা ঢাকায় লজ্জা পায়
ঈদের নতুন পোশাক তাদের স্বপ্নই রয়ে যায়।
গন্ধ যাদের বাইরে ঘরে নিত্য দিনের মিতা
ঈদের দিনের একটু আতর বড়ই বিলাসিতা।
ভাবছো বসে ফেতরা দিলেই এ সব হবে দূর
এমন ঈদের আনন্দতে ওরাও দেবে সুর?


বিলাসিতার পাহাড় চূড়ায় সারা বছর বসে
ঈদের কত বিলাস হবে হিসাবটা যাও কষে
এবার না হয় হিসাবটাকে অন্যভাবে কষো
ওদের মতো একটা দিবস চলার ভাবনায় বসো।
গন্ধ গায়ে ছিন্ন কাপড় ওদের মতোই পরে
ইফতারি আর সেহরীহীন রাতটা উপোস করে
শূন্য পেটে ঈদের পরে করবে কোলাকুলি
ঈদ-আনন্দ দেখবে তখন কেমন যাবে ভুলি।
ঘরে ফিরে সস্তা সেমাই, টুকরো গোস্ত রুটি,
দিন মজুরের কাজে যাবে - পেট মানে না ছুটি।
নেইকো ঘরে কোন সঞ্চয় পায় না কোন বোনাস
ঈদের ছুটি ওদের ঘরে নিঠুর উপহাস।
বুঝবে তখন রোজার নামে কী দিয়েছো ফাঁকি
ওদের বুকে বুক ঠেকিয়ে কী ব্যথা যাও রাখি।


রোজার মাসে ফেতরা এবং জাকাত করো দান
নিজেকে তাই ভাবছো তুমি মস্ত দাতা-মহান।
এমন ভাবে রোজা, ঈদ আর ফেতরা, জাকাত নিয়ে
বছর বছর খোদার খাতায় যাচ্ছ ফাঁকি দিয়ে।
মানুষ হয়ে বাঁচার তরে যা কিছু সব লাগে
নিত্য সে সব যোগান দেয়ার ভাবনা ভাবো আগে।
সারা বছর সে সব দেয়ার না হলে অভ্যাস
ফেতরা, জাকাত দেয়ার মর্ম নেহাত পরিহাস।
আল্লাহ দিলেন তোমার ধনে ওদের জন্যে রুজি
তাদের ফাঁকি দিয়ে ভাবলে সে সব নিজের পুঁজি।
ওদের যাহা দাওনি ওদের - তাই তো সর্বহারা
একটুখানি দিয়েই ভাবো তোমার দায়টা সারা।
একটা দিনের একটা নামাজ পড়লে এক জামাতে
সারা বছর শ্রমের সঠিক মূল্য দাওনা হাতে।


এই যদি হয় তোমার বুঝে ইসলামী বিধান
আল্লাহ জানে কতখানি উল্টো তোমার জ্ঞান।
উল্টো এ জ্ঞান করতে সোজা উল্টো করো ঈদ
বুঝবে তখন সোজা কাজটা সোজা করার তাগিদ।
দেখবে সমাজ বদলে গেছে - সবার ঘরে ঘরে
সারা বছর ঈদের খুশী আছে সদায় ভরে।
ঈদের দিনে সেদিন হবে সত্যি কোলাকুলি
নইলে হবে - সবাই সমান- মিথ্যে মুখের বুলি।
আয় রে তবে ঈদটা এবার উল্টো করে করি
সেই আলোতে সবার জীবন নিত্য ঈদে ভরি।