আমি এখন মস্ত রোগের রুগী
রোগের জ্বালায় অহর্নিশি ভুগি
হাজার রকম পরীক্ষা আর হাজার রকম ওষধ
যেভাবে হোক চাই তো টাকা করতে ও সব শোধ
কত কিছুই খাওয়া-করা হয়ে গেছে মানা
হাজার রোগের নাম ও ওষধ তাও হয়েছে জানা।


বাড়ির পাশের রফিক পাগল হঠাৎ সে সব শুনে
বুদ্ধি দিতে এগিয়ে এলো তার সহজাত গুণে  
প্রথমে তার প্রশ্ন হলো, ওষধ এবং ডাক্তার
এ সব কেন দরকার?


বলি তারে, ওরে হাদার হাদা
তুই আস্ত গাধা
বাঁচতে যদি চাই
ওষধ ছাড়া একদণ্ড উপায় যে আর নাই।


রফিক বলে এই তো পরিস্কার
সন্দেহ নেই আর
রোগটা তোমার বাঁচতে চাওয়া শুধু
মরার ভয়ে বুকটা পোড়ে ধু ধু।
নেই চিন্তা কোনো
এখন থেকে আমার কথা শোনো
কত অর্থ-সময়
করলে অপচয়
শুধু বাঁচার তরে
তাই তো সদাই কান্না করো মরি মরি করে।
আজ থেকে সব ওষুধ-পথ্য রাখো শিকেয় তুলে
বাঁচতে চাওয়া একেবারে যায় দেখি সব ভুলে
বাঁচার চেয়ে মরার করো স্তুতি
মরার তরে সারাক্ষণই নাও দেখি প্রস্তুতি
যাওনা ভুলে খাওয়া-করার সকল নিষেধ বাধা
বন্ধ করো মরার ভয়ে সারাক্ষণই কাঁদা
দিনে রাতে মরণ তুমি ডাকো বারে বারে
সে দেখো আর আসবে নাকো তোমার কাছে ধারে।


অনেক রাগে রেগে
বলি তারে, যা এখনই এখান থেকে ভেগে
পাগল আছিস সেই তো ভালো, গাঁজায় দিলে দম
লাঠির ঘায়ে পিঠ ফাঁটাতে করবো নাকো কম।


রফিক বলে, প্রমাণ দেবো, নইকো আমি ভুল
মিছেই শুধু ভেবে ভেবে হারালে সব চুল।
বাড়ির পাশেই থাকে দেখো একলা কানা বুড়ি
ভিক্ষা করেই দিনটা চলে, বয়সও চার কুড়ি
মরণকে সে ডেকে ডেকে প্রতি রাতেই কয়
সে বাদে আর গাঁয়ে সবার মরণ কেন হয়?
মরণ কেন আসে না তার এই হলো তার খেদ
নেইকো কোন ওষধ-পথ্য, খাওয়া-পরায় নিষেধ।
ছেলেমেয়ে নাতি নাতনি সব মরেছে যার
মরণকে সে ডাকে বলেই হয় না মরণ তার।