সেদিন বসিয়া ট্রেনে
বাহিরে চাহিয়া একটি কথা সহসা গেলাম জেনে
চোখে চোখে আর কানে কানে যেন চলিতেছে ষড়যন্ত্র
প্রকৃতির কানে কেউ কি হঠাৎ দিয়ে গেলো কুট-মন্ত্র?


কহিল প্রকৃতি, সময় এসেছে শুনে যাও তবে আজ
অচিরে আমরা বন্ধ করিব নিত্য নতুন সাজ।
দেখিবে না আর কেমন করিয়া ফুলে ফুলে সেজে টানি'
অমৃত ঢালি, গন্ধে, বর্ণে ভ্রমরে এ বুকে আনি।
কেমনে একটা ফুটন্ত ফুল মুখে হাসি লয়ে ঝরে
যতনে কি সে রেখে যায় সেথা নতুন বংশধরে।
দিন বদলের চক্রে যেথা বিবর্ণ পাতা কাঁদে
কচি পাতাগুলো সবুজ হইয়া কি আশে বুক বাঁধে।
কেমন করিয়া সদ্য ফোটা ছানাগুলি ডানা মেলি
ক্ষণিকে নামিয়া নীল সরোবরে করে যায় জলকেলী।
কেমনে পবন উঠায় নাচন পাতা থেকে জলে ছন্দ
উদয় অস্তের নরম সোনালী রং হয়ে যাবে বন্ধ।


সকরুণ স্বরে কহিলাম আমি, মানুষের কি অপরাধ
যার তরে সব বন্ধ করিয়া হবে হেনো তব প্রতিবাদ?


কহিল প্রকৃতি, মানুষেরা আর জানালায় চোখ রেখে
বাহিরে চাহিয়া হয় না মুগ্ধ আমাদের রূপ দেখে।
তাদের দৃষ্টি বন্ধ করেছে হাতে ধরা ছোট যন্ত্র
হৃদয়ের দ্বার রুদ্ধ করেছে প্রযুক্তির মায়া-মন্ত্র।
সকালে সাজি সন্ধ্যায় কাঁদি মরি মরি কি যে লজ্জা
তোমরা যখন চাহিয়া দেখো না, তবে করি কেন সজ্জা?