আমি লজ্জায় মরি কেমনে বলি নিজেরে মুসলমান
নিজেই যখন আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়েছি হাদীছ কোরান!
কোরান বলে, যে যার ধর্মে, কর্মে রবে স্বাধীন
অন্য ধর্মে  গালি দাও যদি, হবে ইসলামহীন।
কে গালি দিলো তার ফেসবুকে পবিত্র কাবাঘরে
তাই নিয়ে আজ ভাঙো মন্দির বাংলার প্রান্তরে।
আঘাত হানো হিন্দু ভাই ও মা বোনের সম্ভ্রমে
যুগের আঁধারে আসল ইসলাম ভুলিয়াছো সব ক্রমে।
অমুসলিমের তুলিতে এঁকেছে জানি জঘন্য কার্টুন
নবীজির ভালোবাসাতে বুকে জ্বলে বেদনার আগুন।
জানি কী কষ্ট সহ্য করা কোরানের অপমান
তবু প্রতিবাদে কৌশলী হবে সঠিক মুসলমান।
জানি মুসলিম নির্যাতিত পৃথিবীর কোণে কোণে
ব্যথার আগুন ও ক্রোধ জমা হয় মুসলমানের মনে।
মুসলিম হলে সয়ে যেতে হবে কত না নির্যাতন
যত দাবী ও প্রতিবাদ হবে ন্যায়ের উপর স্থাপন।


নবীজি যেদিন রক্তে ভাসেন তায়েফের পথে পথে
আল্লাহ সেদিন সরালেন কি অমুসলিম ধরা হতে?
নবীজি কত না কষ্টে ছিলেন অত্যাচারে ঘেরা
তবু দেখালেন ক্ষমা ও সেবায় তাঁর চরিত্র সেরা।
বিতাড়িত এক খ্রিষ্টান দলে নিজে দিলেন আশ্রয়
নিজ মসজিদে জায়গা দিলেন, ক্রিস্টমাচ যেন হয়।
তপ্ত মরুতে বেলাল পুড়েছে বুকেতে পাথর লয়ে
যে নির্যাতন নিশ্চিত জেনে তবু মুসলমান হয়ে।


সেদিন হলে নবীজি ও সাথী প্রতিশোধী মুসলিম
পৃথিবীর বুকে ঘটে যেতো তবে নিঠুরতা-নিঃসীম।
গির্জা, মন্দির, মূর্তি ভাঙায় হতো যদি মহাপুণ্য
পৃথিবীতে শুধু মসজিদ ছাড়া সব হয়ে যেতো শূন্য।
ইউরোপ হতো গির্জাবিহীন, ভারত হারাতো মন্দির
মক্কা-বিজয় ইতিহাস তবে নজির হতো না সন্ধির।
আরও কত শত যুদ্ধে বিজয়ী শত মুসলিম বীর
করে রেখে যেতো দ্বিখন্ডিত নারী ও শিশুর শির।
মুসলিম হলে সও বা জেতো, সত্যের পথে হেঁটে
শহীদ হবে, অন্যায়কারী নেয় যদি শির কেটে।
তবুও তোমার অন্যায় কাজে যেন নিরস্ত্র অসহায়
প্রতিবাদ বা প্রতিশোধ নামে কোনদিন ব্যথা না পায়।


ভাবো আজিকে দেশে দেশে কেন মুসলিম পায় ঘৃণা
ইসলামের এই অবমাননায় আমরাই দায়ী কিনা?
মুসলিমই আজ কত বিভক্ত কেউ শিয়া, কেউ সুন্নি
শিয়া নিধনে কেমনে ভাবো সুন্নির হবে পুণ্যি?
প্রতিবাদ আর খুন-ধ্বংস নয় কভু এক কথা
ইসলাম কি শান্তির থাকে, মরে যদি মানবতা?


শোনো তবে আজ, হারাও যদি শান্তির সেই ধর্ম
মুসলিম নামে দুনিয়ার বুকে করে যাও অপকর্ম,
আল্লাহ নিজেই তোমাদের তবে করে দেবে ঠিক ধ্বংস
ইসলাম-নামে মিথ্যা মুসলিম করে দেবে নির্বংশ।
সত্য ধর্মের ঝান্ডা দেবে অন্য জাতির হাতে
ইসলাম শেষে শান্তিতে রবে সকল ধর্মের সাথে।
ডাকো যদি আজ বিশ্ব-মানব এই ধর্মের নামে
আগে নিজে হও সুদীক্ষিত শান্তির ইসলামে।


রচনা: ৪ নভেম্বর, ২০১৬