(## আসরে যদি কবি ও রাজনীতিবিদ থাকেন, তবে ক্ষমাসুন্দর মনে পড়বেন!)


একদিন আমরা বসেছিলাম গ্রামের বুড়ো বটগাছটার নীচে
অনেক কথা, অনেক মানুষ, নানান গল্প চলছে মিছে মিছে।
হঠাৎ আমি শুধালাম গ্রামের মুরুব্বি হান্নান দাদাকে
কবি ও রাজনীতিবিদের তফাৎ বুঝাতে পারো কি এই গাধা কে?
দাদা বললো, কাজটা অতি সহজ, যদি বুঝো এই বটগাছ
বুঝতে হবে না পাহাড়, নদী, আকাশ, সাগর, বাঘ, ভাল্লুক, মাছ।
কবি লিখবে এর মাহাত্ম, তারপর মাত্রা, সারি, স্তবক গুনবে
কেউ যদি না শুনে, নিজেই আবৃত্তি করে ছন্দ তার শুনবে।
তার কল্পনায় এ বটগাছে হয়তো ধরবে বড় বড় কাঁঠালি কলা
অন্য কবিরা বলবে, কি কাব্যিকতা! দারুন হয়েছে বলা।
কেউ যদি বলে, বাহ্, চমৎকার! ফুটবে কবির মুখে প্রকান্ড হাসি
কেউ যদি বলে, ধ্যাৎ! কবি নিজেই পরবে নিজ গলে ফাঁসি।
বাড়ী গিয়ে বউয়ের মুখে খাবে কয়েকশো অশ্রাব্য গালাগালি
আধখানা শুকনো রুটি খেয়ে ভাববে খেলো চাঁদের আধ ফালি।


রাজনীতিবিদ কিছু লেখা ও বলার আগে ডাকবে পাড়ার লোক
যে আসবে তাকে ভালোবাসবে, যে আসবেনা সে হারাবে চোখ।
তারপর, ভাই সব, মা জননী, বন্ধুগণ, বলে ফাটাবে গলা
আশ্বাস দেবে, ভোটে জিতলে বটগাছটায় ধরাবে সাগর কলা।
তার ভাঁড়রা সাক্ষী দেবে, তারা তা ইতিহাসে দেখেছে আগে
তা ঘটাতে আবার এই নেতাকে ভোট ছাড়া আর কিইবা লাগে!
ভোটে জিতে, নেতাজি প্রথমেই কাটবে সেই বটগাছটা
বিক্রির টাকা দিয়ে কিনে খাবে বাজারের সবচেয়ে বড় মাছটা।
বটগাছটার জায়গায় লাগাবে অনেক অনেক সাগর কলা
সেই কলায় কেউ যদি ভুলে হাত দেয়, নেতা কাটবে তার গলা।
কেউ যদি কলার ভাগ চেয়ে করে মৃদু প্রতিবাদ
আগামী ভোটে হারার ভয়ে নেতার হাতে থামবে তার আর্তনাদ।


আমি বললাম, যাহ: দাদা! তফাৎ এতো সহজ কী করে হয়?
দাদা বললো, তোমাদের শিক্ষিতদের এই একই দোষ রয় -
সহজ জিনিস বুঝতে গিয়ে করে ফেলো কঠিন
নিজেও বুঝো না, আমাদেরও বুঝাতে পারো না কোনোদিন।


রচনা: ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬