ম্যাক হেমব্রমের 'শুন্য দর্শন' কবিতার উপর কবি মো: হাফিজুর রহমান বিপ্লব (ইথার)(অতিরঞ্জন) এর বেশ ইন্টারেস্টিং আলোচনা পড়লাম (কবিতাটি নীচে ইথারের ২৮/৬ এর পোস্ট থেকে পড়ে নিন)| জানিনা কবিতাটার প্রকৃত কবি কে - ইথার নিজে হলে অবশ্য  যে অর্থে ব্যাখ্যা করেছেন সেই অর্থেই লিখেছেন| কবি অন্য কেউ হলে অবশ্য তাঁর নিজের ব্যাখ্যা প্রণিধানযোগ্য| তবে পাঠক কিন্তু তাঁর নিজের মতো করে বুঝার অধিকার সব সময়ই রাখেন| আমার মতো সাধারণ পাঠক নিচের মতো বুঝলো:


ধর্মীয় প্রার্থনা ও জাগতিক কাজ উদাসীনতায় ধ্বংস হয়| উদাসীনতায় বা মনের বিভ্রান্তিতে ধর্মীয় প্রার্থনার পদাবলী (যেমন নামাজের সূরা, পূজার মন্ত্র) সঠিকভাবে পড়া হয়না, সাংসারিক হিসাবের কাজ হয় না, কবির কবিতায় কাব্যিকতা আসেনা, ভাব আসেনা, ছন্দ আসেনা| এটাই কবির বর্তমান মনের অবস্থা, যেটা অনেকগুলো পরস্পরবিরোধী দর্শন থেকে কবির মনে জন্ম নিয়েছে| সংশয় দর্শনে কবির মন বিভ্রান্ত কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা তা নিয়ে - আস্তিক আর নাস্তিকের মাঝে দোদুল্যমান| ধর্ম-নীতির (বিশেষ করে মুর বা মুসলিম ধর্ম-নীতি) সাথে মার্ক্সবাদের দ্বন্ধে কবি বিভ্রান্ত|


এতসব দ্বন্ধের মাঝে কবি হারিয়ে যান, ভাবনা তালগোল পাঁকিয়ে যায়, উদাসীন হন, বিভিন্ন দর্শনের মতোই মনের শূণ্যতা বোধ করেন| ইমাম গাজ্জালির মুসলিম ধর্মের দার্শনিক ব্যাখ্যা, অষ্টমার্গের দর্শনে ধর্মকে বুঝার প্রচেষ্টা কবির মন ও মাথায় উত্তাপ ও চাপের সৃষ্টি করে| ব্যাপারটা পদার্থ বিজ্ঞানের E  = mc2  সূত্রের মতো: কম ভরের বস্তু কণাকে যদি প্রচন্ড গতি দেওয়া যায় তাহলে তা যে প্রচন্ড শক্তি তৈরি করে, কবির মনে এই সূক্ষ্ণ বিষয়গুলো তীক্ষ্ণ চিন্তায় ঠিক ওরকম প্রচন্ড বিভ্রান্তি ও চাপের সৃষ্টি করছে| সবকিছু মিলে কবির মননে প্রচন্ড যন্ত্রণার ঝড় তোলে| কবি এর থেকে বার হতে চান, কিন্তু পারেন না, বৃত্তের গন্ডিতে আবর্তিত হতে থাকেন| মানব জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা অনুভব করেন - সীমাহীন মহাশূন্যে একটা এটম কণা (যা মানুষের খালি চোখে দেখা যায় না) খোঁজার দুরাশার মতো মনে হয়| অস্থির জলে চাঁদের ছায়া যেমন অসম্পূর্ণ, ভঙ্গুর, অস্পষ্ট, কবির মনের অবস্থা অনেকটা ওরকম, যে অবস্থায় আমি ও আমিত্বের বোধ, ব্যাখ্যা জ্যামিতির থেলসের সূত্রের মতো অটো সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট নয়|


খলিলুর রহমান
১ জুলাই, ২০১৬