কবি লেখে কবিতা, ভাবে মনে মনে
পড়বে এই কবিতা কত শত জনে।
ভাব চাই, ভাষা চাই, চাই মধু ছন্দ
প্রেম ও বিরহ চাই, দুঃখ ও আনন্দ।
লেখার সময় চাই, আর চাই প্রেরণা
মন বলে দায়ে পড়া কাজ তুমি সেরো না।
কবি বসে কাঁদে, হাসে, ভাবে আনমনা
কেমন হয় যদি দিই প্রেমিকার নাম চন্দনা?


কবির গিন্নি হঠাত তিরিক্ষি মেজাজে
ছাই পাশ কি সব লেখো, আসে কি কাজে?
মুখে তো কউ না কথা, মনে কি যে ভাবো
ও সবে কি বাজারের চাল ডাল পাবো?
জানি না পড়েছ কোন ডাইনির প্রেমে
নইলে কথার মাঝে যাও কেন থেমে?
কাল রাতে ঘুম ঘোরে মোর ডানে বামে
কারে যেন খুঁজেছিলে চন্দনা নামে!


কবি বলে, মনে ছন্দ ক্ষুধা তাই বধূ
একটু আনমনা, কেন ভুল বোঝো মধু?
বন্ধুরা লেখে কত নব নব ছন্দ
লেখার সময় কম, পড়ে পাই আনন্দ।
মনে মনে অজান্তে হয়ে যায় চাওয়া
কবি ছাড়া অকবিরা হয়ে যাক হাওয়া।
পৃথিবীটা  থাক ভরে কবি আর কবিদের গানে
তারাও কবি হোক, যারা এতে ছন্দ পতন আনে।


বধু বলে, আহা মরি কি আমার কবি
পত্রিকায় দেখিনি নাম অথবা এক ছবি!
যা দিয়ে আসে না টাকা হয় নাকো নাম
মিছে মিছে তার ছাই কি বা আছে দাম?
ছাড়ো সব পাগলামি কাজে দাও মন
ওসবে চাকুরী গেলে ঠেলা বুঝবে তখন।


ভাববার সময় নেই, লিখি ছাই পাশ
সময় পেলে বন্ধুদের সাথে খেলি তাস।
কনসাল্টিং কাজ করি সারাক্ষণ ব্যাস্ত
প্রতিদিন শুনি কত খরিদ্দারের খ্যাস্ত।
তার উপর আছে বস অফিসের মেনেজার
মরণ হয়না কেনো মেনহোলে পড়ে তার?
ঘন ঘন যেতে হয় সেই দুরে ভিয়েতনামে  
প্রমোদ বিহারে নয়, নিরস চাকুরীর কামে।


হাজার বিড়ম্বনা, তবু লিখি কবিতা বা ছড়া  
মনে আশা যদি হয় বন্ধুদের পড়া।
কয়জন বন্ধু পড়ে, বলে বাহ বাহ
অন্যরা হয়ত পায় গায়ে তীব্র দাহ।
কেউ বলে তোমার লেখায় কাব্যের অভাব
বড় জোর আছে ওতে ছড়ার স্বভাব।
কেউ বলে, লেখো ভালো তবে আমি চাই
শেখ সাদীর মত ধর্মকে আনো কবিতায়।


কবি বসে ভাবে, না পায় অন্ত আদি
কোথায় এ অধম আর কোথায় শেখ সাদী?
অপরের লেখা পড়ি আর মনে হয়
আমার কথা যেন তাতে কিছু নয়।
তাই তো মনের ক্ষুধায় লিখি এই  ছন্দ
এতে নেই ভাব আর সুভাষার গন্ধ।
ছোলা, গম ঘি দিয়ে যেভাবেই রাঁধি
হবে কি পোলাও তা, যতই পোলাও বলে কাঁদি?
তবু যদি তাতেই হয় বন্ধুদের ভোজ
বন্ধুদের সাথে কথা হবে তাতে রোজ।


পার্থ, অস্ট্রেলিয়া, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১২